‘চা শ্রমিকের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব বাগান মালিকদের’
২৭ আগস্ট ২০২২ ২২:১৮
ঢাকা: চা বাগান মালিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা মাথায় ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করে। আপনারা মালিকরাও উপার্জন করেন। কাজেই তাদের ভালো-মন্দ দেখা সবার দায়িত্ব। এই খেটে খাওয়া মানুষের দিকে আমাদের তাকাতে হবে।
শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে গণভবনে চা বাগান মালিকপক্ষের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব জানান, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে রেশনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা মিলে দৈনিক প্রায় ৫০০টাকা মজুরি হবে তাদের।
বৈঠকে চা বাগান মালিকপক্ষের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহ আলম। বৈঠকের শুরুতে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চা শিল্পটা আমাদের দেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এক সময় আমাদের দেশে চা বড় অর্থকরী ফসল ছিল। সেটা আমরা রফতানি করে অর্থ উপার্জন করতাম। কিন্তু এখন দেশের মানুষের আর্থিক অবস্থা ভালো হয়েছে। তাই দেশেও চায়ের চাহিদা বেড়ে গেছে। এটাই হলো বাস্তবতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। নতুন নতুন চা বাগান করেছি। পঞ্চগড়ে কখনো চা বাগান ছিল না। এটা আমি উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সেই চা বাগানটা আস্তে আস্তে পঞ্চগড় থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত ছেয়ে যাচ্ছে। একচুয়ালি এখন ঠাকুরগাঁও পর্যন্ত এসে গেছে। আর লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামের দিকে অনেকে ছোট ছোট করে বাগান শুরু করছে। আগে চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগেই শুধু চা বাগান ছিল।‘
চা বাগান মালিকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অর্থনীতি বা ব্যবসা-বাণিজ্য সবই মোটামুটি ক্ষতিগ্রস্থ। এতে কোনো সন্দেহ নাই। কিন্তু এই খেটে খাওয়া মানুষগুলোকেও তো আমাদের একটু দেখতে হবে।’
আরও পড়ুন: চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ
এদিকে, দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচিতে টানা ১৯ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল চা শ্রমিকরা। বার বার মালিক-শ্রমিক আর প্রশাসনের বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা বাগান মালিকদের বৈঠকে বিষয়টির সুরাহা হবে বলে আশাবাদী আন্দোলনকারীরা।
দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে দেশের ২৪১ চা বাগানে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। গত ৯ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসে সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে শ্রমিকদের একাংশ আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে ফেরেন। আরেক অংশ এখনও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে, চা শ্রমিকদের টানা ধর্মঘটে সারাদেশের বাগান থেকে চা-পাতা উত্তোলন, কারখানায় প্রক্রিয়াজাত ও উৎপাদন বন্ধ থাকে। এতে স্থবির হয়ে পড়ে দেশের চা শিল্প।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম