Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সরকারের সমালোচনা হয়, তাই বিতর্ক প্রতিযোগিতা বন্ধ ছিল’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৫১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সরকারের সমালোচনা হয় বলে বাংলাদেশ টেলিভিশনে এক সময় বিতর্ক প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর ফের বিতর্ক প্রতিযোগিতা চালু করেন বলে জানান।

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র আয়োজিত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে প্রথম জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন অনেকদিন বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেনি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার পর জিজ্ঞেস করলাম কেন বিতর্ক প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দেওয়া হলো? তখন আমাকে টেলিভিশনের কর্মকর্তারা বললেন, সরকারের অনেক সমালোচনা হয়, সেজন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি বললাম, সমালোচনা তো হতে হবে। সরকারেরও সমালোচনা হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সমালোচনাবিহীন সমাজ হতে পারে না। সমাজে সমালোচনা থাকতে হবে, দায়িত্বে যারা থাকবে তাদের সমালোচনা অবশ্যই হবে। দায়িত্বে না থাকলে তো সমালোচনা নাই। বিতর্ক হতে হবে, তাহলেই সমাজ এগিয়ে যাবে। তখন আমি সিদ্ধান্ত দিলাম বিটিভি’র দুটি কেন্দ্রে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের রাষ্ট্রকে একটি বিতর্ক, ন্যায় এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন করতে চান। ন্যায়, জ্ঞান এবং যুক্তিভিত্তিক সমাজ গঠন করতে হলে সমাজে বিতর্ক থাকতে হয়। বিতর্ক না থাকলে ন্যায়ভিত্তিক গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা গঠন সহজ হয় না। বাংলাদেশ টেলিভিশনের আয়োজনে এই যে বিতর্ক প্রতিযোগিতা ধারাবাহিকভাবে আয়োজন করা হচ্ছে এতে বিতর্ক ও যুক্তিভিত্তিক এবং গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে সহায়ক হবে।’

বিজ্ঞাপন

‘শুদ্ধাচার ও নৈতিকতা গঠনে পরিবারের চেয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাই বেশি’- প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের এই বিষয় নিয়ে আলোকপাত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আসলে নৈতিকতা এবং শুদ্ধাচার সুষ্ঠু সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তবিক অর্থে সমগ্র বিশ্বব্যাপী মানুষ প্রচণ্ডভাবে যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। যন্ত্রের ব্যবহারের সাথে সাথে মানুষও যন্ত্রের মতো জড় পদার্থ হয়ে যাচ্ছে এবং সেটির সঙ্গে নৈতিকতা এবং মানবিকতাও লোপ পাচ্ছে। মানবজাতিকে যদি টিকিয়ে রাখতে হয় তাহলে এই সমস্যা থেকে উত্তরণ প্রয়োজন।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মানুষ যদি যন্ত্রের মত জড় পদার্থ হয়ে যায়, নৈতিকতা এবং মানবিকতা হারিয়ে যায়, তাহলে তো মানুষ আর মানুষ থাকে না। এই ক্ষেত্রে এখানে পরিবার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটিরই ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারও চেয়ে কারও ভূমিকা কম নয়। আমি নিজেও স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি, কখনো তৃতীয় হইনি। আমি নিজের জীবনের পেছনে ফিরে তাকালে বুঝি, যারা আজকের এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে যে দক্ষতা ও কনফিডেন্স তৈরি হয়েছে, জীবন চলার পথে তাদেরকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

সারাদেশ থেকে ১০৪ টি দল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় প্রথম রাউন্ডে স্কুল, দ্বিতীয় রাউন্ডে কলেজ, তৃতীয় রাউন্ডে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের প্রতিযোগীরা অংশ নেন। চূড়ান্ত পর্বের বিজয়ী দল বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও রানার-আপ দল জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রতিযোগীদের হাতে ট্রফি ও সম্মাননার চেক তুলে দেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম কেন্দ্রের স্টুডিওতে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় এবং বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজা আক্তার।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

ড. হাছান মাহমুদ বিতর্ক সমালোচনা সরকার

বিজ্ঞাপন

আদানি গ্রুপের নতুন সংকট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

আরো

সম্পর্কিত খবর