চাকরির আশ্বাসে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে
৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:০৮
রাজশাহী: চাকরির আশ্বাসে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পুঠিয়া পৌর মেয়র আল মামুন খানের বিরুদ্ধে। রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করলে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে পুঠিয়া থানা পুলিশ।
মামলার বাদী হয়েছেন ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী। তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আল মামুন খান পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এর আগেও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন এক নারী। মেয়র মামুন সোমবার সকাল থেকে পলাতক আছেন। তার মুঠোফোনের নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে।
ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী পুঠিয়ার এক ব্যবসায়ীর মেয়ে। এছাড়াও তিনি একটি রাজশাহী কলেজে অনার্স শেষবর্ষেও শিক্ষার্থী। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী।
ওই তরুণী জানান, এক বছর আগে চাকরির দেওয়ার জন্য মেয়র আল মামুন আমাকে তার বাড়ি গোন্ডাগোহালীতে ডেকেছিলেন। তিনি চাকরি দেয়ার জন্য অনৈতিক প্রস্তাব দেন। তাতে রাজী না হলে তিনি বিয়ে করার আশ্বাস দেন। পরে তার বাড়ির মধ্যে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এবং বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নিষেধ করে। মুখ খুললে মেরে ফেলবেন বলে হুমকিও দেন মেয়র।
এর পর ওই তরুণীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে। এর মধ্যে পুঠিয়া পৌরসভা কার্যালয়ে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়েও তিনি ধর্ষণ করেন। পরে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হলে তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে প্রাণনাশ ও মানসিকভাবে অত্যাচার শুরু করেন। এক পর্যায়ে জানিয়ে দেন যে, ওই তরুণীকে চাকরি ও বিয়ে কোনোটিই দেওয়া হবে না।
পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) আবদুল বারী মেয়রের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘রোববার রাতে এক নারী বাদী হয়ে থানায় এই অভিযোগটি দায়ের করেন। সোমবার সকালে সেটি মামলাভুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর মেয়রকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে মেয়র পলাতক রয়েছে।’
ওসি বলেন, ‘ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে সোমবার দুপুরে রামেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
এর আগেও, পুঠিয়া পৌর মেয়র আল মামুন খানের বিরুদ্ধে একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। ধর্ষণে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তিনি সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবি করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বছর ১১ এপ্রিল মেয়রের লোকজন তাকে ব্যক্তিগত অফিসে তুলে এনে নির্যাতন করে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই সেবিকাকে মেয়রের কার্যালয় থেকে উদ্ধার করেন। পরে তিনি বাদী হয়ে মেয়রের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার কিছুদিন পর আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতার তদবিরে বিষয়টি রফাদফা করেন মেয়র আল মামুন।
সারাবাংলা/পিটিএম