Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাঁচ শর্তে মেয়াদ বাড়ছে আখাউড়া রেল প্রকল্পের

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্টে
৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:৫৭

ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: পাঁচ শর্তে অনুমোদনে পাচ্ছে আখাউড়া রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাব। আগামী মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে ‘আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ (বাংলাদেশ অংশ)’ শীর্ষক প্রকল্পের চতুর্থ সংশোধনের এই প্রস্তাবটি। কোভিডের (কোভিড-১৯) ধাক্কায় বাস্তবায়ন দেরি হওয়ায় এবার সংশোধন করে এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি ১৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ২৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ সময় পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতি ৬১ শতাংশ। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের আখাউড়া হয়ে ভারতের কলকাতা এবং আগরতলার মধ্যে নতুন রেল সংযোগ স্থাপন এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, মূল অনুমোদিত প্রকল্পটিতে বাস্তবায়নের সময় ছিল ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর প্রথমবার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই মেয়াদ ২ বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। দ্বিতীয়বার আবারও ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ ১ বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছিল। এতেও কাজ শেষ না হওয়ায় তৃতীয়বার ১ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এতেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় চতুর্থবার ফের ১ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

চতুর্থ দফায় মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশনের দেওয়া শর্তগুলো হলো— নির্মাণ কাজের ঠিকাদারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির মেয়াধ বৃদ্ধি করা যাবে না। এছাড়া প্রকল্পের কাজ নিবিড়ভাবে পরিবীক্ষণ করে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত মেয়াদে ঠিকাদার নির্মাণকাজ সম্পাদনে ব্যর্থ হলে চুক্তির সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ এবং পিপিআর অনুযায়ী ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (ডিপিপি) সংস্থান অনুযায়ী কাজের পরিমাণ ও গুণগতমান নিশ্চিত করে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং সকল টেস্ট রিপোর্টেও কপি আইএমইডিতে পাঠাতে হবে। বর্ধিত মেয়াদের মধ্যে প্রকল্পের সকল অঙ্গের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। বর্ধিত মেয়াদের সংশোধিত কর্ম পরিকল্পনা এবং ক্রয় পরিকল্পনার বাস্তবায়ন অগ্রগতি তিন মাস অন্তর পরিকল্পনা কমিশন ও আইএমইডিতে পাঠাতে হবে। প্রকল্পের মেয়াদ আর কোনো অবস্থাতেই বৃদ্ধি করা হবে না।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে এক বছর বর্ধিত সময় ২০২৩ সালের জুলাইয়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

প্রকল্পের মেয়াদ চতুর্থবারে আরও এক বছর বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর জন্য ২০২০ সালের মার্চ হতে বাংলাদেশ ও ভারতের লকডাউন জারি করায় প্রকল্পের সাইটের কাজ ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে ২০২০ সালের জুলাই হতে স্বল্প পরিসরে কাজ চালু হলেও গত বছরের এপ্রিলে পুনরায় লকডাউন চালু হওয়ায় মাঠ পর্যায়ের কাজ বন্ধ ছিল। প্রকল্পটি ভারতীয় অনুদানে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনুদানের শর্ত অনুসারে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণের জন্য ভারতীয় ঠিকাদার ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিযুক্ত করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের কাজ মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নে ভারতীয় লোকবল কর্মরত রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে জারি করা লকডাউন ও জনসাধারণের চলাচল বিধি নিষেধ থাকায় মাঠ পর্যায়ের কাজের বাস্তবায়নে বিঘ্ন ঘটছে।
অনুদানের শর্ত অনুসারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ সামগ্রী, মালামাল, ইক্যুইপমেন্ট প্ল্যান্টস ভারত হতে আনতে হয়। কোভিড-১৯ এর কারণে স্লিপার এবং অন্যান্য মালামাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নিয়োজিত ঠিকাদারের ভারত হতে নির্মাণ সামগ্রী আমদানি করতে দেরি হয়। এছাড়াও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কর্মরত লোকবল ভারত হতে বাংলাদেশের আসা-যাওয়া করতেও অসুবিধা হওয়ায় প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি।

প্রকল্পের আওতায় মূল কার্যক্রম হচ্ছে, বাংলাদেশ অংশে ১০ দশমিক এক কিলোমিটার ডুয়েলগেজ মেইন লাইন এবং ৪ দশমিক ২৫ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ লুপলাইন নির্মাণ করা হবে। ৫৬ দশমিক ৫১ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ৩টি মেজর ব্রিজ ও ২০টি মাইনর ব্রিজ এবং ৩টি স্টেশন কম্পিউটারাইজড ইলেকট্রনিক সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সত্যজিৎ কর্মকার সারাবাংলাকে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটির সুষ্ঠু বাস্তবায়নের ফলে দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। ফলে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেজে/এনএস

আখাউড়া রেল প্রকল্প

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

বাড়তে পারে তাপমাত্রা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৪

গুলশানে দুইজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৫

সম্পর্কিত খবর