ঢাকা: সরকার নিজের ওপর আস্থা হারিয়ে স্বাভাবিক নির্বাচন চায় না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দলটির বনানী কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইভিএমকে শান্তিপূর্ণ কারচুপির মেশিন আখ্যা দিয়ে জিএম কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলেছে, সব দল চাইলে ব্যালটে নির্বাচন হবে। আসলে নির্বাচন কমিশনের বলা উচিত ছিল, সবাই চাইলে ইভিএম এ নির্বাচন করা হবে। কারণ ব্যালট পেপারে নির্বাচন বিদ্যমান এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য।’
ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উদ্দেশ্য ভালো না হলে কোনো কিছুই ভালো হবে না। নির্বাচন কমিশনকে সৎ উদ্দেশ্যে কাজ করতে হবে।’
এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, ‘মহামারি করোনা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট এর কারণে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকের বেতন কমানো হয়েছে। এমন বাস্তবতায় প্রতিদিন নিত্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ হিমশিম অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটে অনেক দেশই সাধারণ মানুষের জন্য কল্যানমুখী অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করে মানুষের সেবা করেছে। মানুষের কষ্ট দূর করতে অনেকভাবেই সাহায্য করেছে বিভিন্ন দেশের সরকার। কিন্তু এমন বাস্তবতায় মানুষের কল্যাণে আমাদের সরকারের কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। বাজেটে যেটুকু বরাদ্দ দেওয়া হয় তাও দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে না। মানুষ বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন হলে মেগা প্রকল্প বন্ধ রাখা উচিৎ।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র, সরকার ও সরকারি দল এখন এক করে ফেলা হয়েছে।। দেশ ও মানুষের কল্যাণে আমরা সরকারের সমালোচনা করবো, এটা আমাদের কর্তব্য। তাই সরকারের সমালোচনা করলে, রাষ্ট্রবিরোধী মনে করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্র বিরোধী মামলা দেওয়া হয়।’
চলমান রাজনৈতিক সংঘাতের বিষয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ ও গ্রহণযোগ্য না হলে সংঘাত আরও বাড়বে। কারণ আগামী নির্বাচন হবে অস্তিত্বের লড়াই। দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমন একটি জায়গায় নেওয়া হয়েছে, সবাই প্রতিপক্ষকে শত্রু মনে করছে। সবাই মনে করছে, পরাজিত হলে তাকে হত্যা করা হবে, যে পরাজিত হবে সে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমরা চাই না। আমরা চাই সবাই যার যার রাজনীতি করবে। আবার সবার সঙ্গে সবার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে। দেশ ও মানুষের কল্যাণে সবাই এক সঙ্গে কাজ করবে। আমরা চাই, সরকার সবাইকে ডেকে অথবা গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। কারণ অসহিষ্ণু রাজনীতি কারও জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।’
জাতীয় মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট পরিষদের আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বাবু’র সভাপতিত্বে, যুগ্ম আহ্বায়ক প্রিয়াংকা সকুল-এর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ শফি, মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এম রাজ্জাক খান, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, হাফিজ মাস্টার, মঞ্জুরুল হক, যুগ্ম দফতর সম্পাদক সমরেশ মন্ডল মানিক, সদস্য কাজী মামুন, বজলুর রহক বজলু, রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া, পার্টির নেতা ব্যারিস্টার ফাহিম ফয়সাল খান, উজ্জ্বল চাকমা, আব্দুর রহিম রুম্মন।