নতুনভাবে দুই দেশের এগিয়ে চলার গতি সঞ্চার হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:২৫
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের নতুনভাবে একসঙ্গে এগিয়ে চলার গতি সঞ্চার হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার পর ভারত সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ভারত সফরের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতের নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা হন। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইটে সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। সফর শেষে ৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরেন প্রধানমন্ত্রী।
লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি যে কোভিড মহামারিতে দীর্ঘ তিন বছর বিরতির পর এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। সফরের পুরো সময় জুড়ে আমরা ভারতের আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ এবং সৎ প্রতিবেশী হিসেবে সমতা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দুই দেশের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। ভারতীয় নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে সংবাদ মাধ্যমে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আমি বাংলাদেশের জন্য যে প্রীতি ও সৌহার্দ্য লক্ষ্য করেছি তা সত্যিই অসাধারণ। এই প্রীতি সম্পর্ককে সুসংহত করে আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব মিলিয়ে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের নতুনভাবে একসঙ্গে এগিয়ে চলার গতি সঞ্চার হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়া জুড়েই একটি সমৃদ্ধশালী অঞ্চলে পরিণত হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং উপ-রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করেন। করোনাভাইরাস মহামারি প্রাদুর্ভাবের আগে ২০১৯ সালে তার সর্বশেষ সফরের পর আজ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার এবারের ভারত সফরের সময় বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বৈঠকে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, মানবপাচার রোধসহ ইত্যাদি অগ্রাধিকার পায়।পাশাপাশি দিল্লীতে পৌঁছানোর পর রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার দেখা করেন। আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানিরও আজই শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।
৭ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসারদের বংশধরদের ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদানের একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।
প্রধানমন্ত্রী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে রাজস্থানের খাজা গরীব নওয়াজ দরগাহ শরীফ, আজমির (আজমির শরীফ দরগা) এবং ৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফরের প্রথম দিনে দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগাহ পরিদর্শন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দুই পাশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা, মন্ত্রীপরিষদের সদস্যসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনআর/একে