Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুন্সীগঞ্জে উত্তাল পদ্মা, ভাঙনে বিলীন ভিটেমাটি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:১৩

মুন্সীগঞ্জ : সদর উপজেলার চরাঞ্চলের বাংলাবাজারে উত্তাল পদ্মায় একের পর এক নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বিস্তীর্ণ জমি। ইতোমধ্যে কীর্তিশানার ভাঙন আতঙ্কে শতাধিক পরিবার বসতঘর সরিয়ে নিয়েছেন। জেলা সদরের বাংলাবাজার ইউনিয়নের সরদারকান্দি, শম্ভু হালদার কান্দি, মহেশপুর ও শান্তনগর গ্রামে ভাঙনের এ থাবা মেলেছে পদ্মা।

এছাড়া ভাঙন হুমকিতে রয়েছে ইউনিয়নের বাংলাবাজার, ইসলামপুর ও ভুত্তারচর গ্রাম। নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া ভিটেমাটি, বসতভিটা ও ফসলি জমি। সব হারিয়ে দিশেহারা এ এলাকার মানুষ। প্রতি বছর ভাঙনের থাবায় সর্বস্ব হারাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে ছোট হয়ে আসছে জেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের মানচিত্র।

বিজ্ঞাপন

ইউনিয়নের সর্দারকান্দি গ্রামের আলী মিয়া সৈয়াল বলেন, ‘এ পর্যন্ত পদ্মা গর্ভে সর্দারকান্দি ও শম্ভু হালদারকান্দি গ্রামের ২০০ বিঘা ভিটেবাড়ি নদীতে ভেঙে নিয়ে গেছে। গত কয়েক দিনে এ এলাকার মোখলেছ, তাইজুল ইসলাম, হাতেম সৈয়াল, কাজল সৈয়াল, সাইফুল, আলেয়া, ইমরান আশরাফ উদ্দিন, রাজাউল্লাহ, আল-আমিন, বিল্লাল ফকির, জসিম উদ্দিন, নান্নু, আমিন, মোবারক, রাজ্জাক সরদার, সোলায়মান, কালু সৈয়াল, আবু কালাম, পাখি সৈয়াল, শাহীন খান, আজিজ, মজিদ সৈয়াল, রেজাউল্লাহ, নয়া মিয়া, হরিছ সৈয়াল, চম্পা বেগম, নাসির মাঝি, বাবুল মাঝির বসতভিটা নদী ভেঙে নিয়ে গেছে। মানুষগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে।’

একই গ্রামের মাকসুদা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে কৃষি কাজ করে। অনেক কষ্টে একটা বিল্ডিং তুলেছিল। কিন্তু বিল্ডিংটা নদীতে ভেঙে নিয়ে গেছে। এখন আমরা কোথায় যাবো। রাতে মানুষের বাড়িতে গিয়ে থাকি। দিনে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি। সরকার যদি আমাদের একটু সাহায্য করতেন খেয়েপরে বেঁচে থাকতে পারতাম।’

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় মায়া বেগম বলেন, ‘চার-পাঁচদিন আগে আমার বসতঘর সরিয়ে নিয়েছি। খুব শখ করে অনেকগুলো মুরগি পালতাম। মুরগির খোয়ারটা এখানেই ছিল। আজ মুরগি আর খোয়ার দুইটাই বিক্রি করে গেলাম। নিজেদের থাকারই জায়গা নেই, মুরগি পালব কীভাবে। ঘর ভেঙে নিয়ে অন্য জায়গায় রেখেছি। ভিটার মায়া ছাড়তে পারি না। রান্না-বান্না বাদ দিয়ে ভিটায় এসে বসে থাকি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র সংকর চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। নদীতে কি পরিমাণ গভীরতা রয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন হয়েছে। ৫০০ মিটার এলাকায় ভাঙন তীব্র।’

তিনি আরও বলেন, ‘এত বড় এলাকায় ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে কিছু করার মতো কোনও সুযোগ নেই। কারণ এখানে বাঁধ দিতে আনুমানিক ছয় কোটি টাকার মতো লাগবে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠাবো। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/ইআ

উত্তাল পদ্মা নদী ভাঙন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর