৩৬ প্রতিষ্ঠান-ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা কমিশনের মামলা
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:৫৯
ঢাকা: বাজারে অস্বাভাবিকভাবে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে ৩৬ প্রতিষ্ঠান-ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি)। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা, এস আলম, স্কয়ার, প্রাণ, এসিআই, সিটি, আকিজ, মেঘনাসহ ৩৬ কোম্পানি ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতা কমিশন তাদের নিজস্ব আইনে এ মামলা করে। সেদিন ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে ১১টি মামলার তথ্য প্রকাশ করেছিল কমিশন। সোমবার (২৬ অক্টোবর) ৪৪টি মামলার তথ্যই প্রকাশ করেছে কমিশন। এ সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা বাজারে চাল, আটা, ময়দা, ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও টয়লেট্রিজ পণ্যের ‘অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে অস্থিরতা’ তৈরি করেছে।
প্রতিযোগিতা কমিশনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী— আটা-ময়দার বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য ৮ টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছেন মেঘনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আকিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি, এসিআই, টি কে গ্রুপের এমডি, নুরজাহান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডি, এস আলম রিফাইন্ড ইন্ডাস্ট্রির এমডি এবং সিটি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি।
চালের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য ১৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রতিযোগিতা কমিশন। স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চেয়ারম্যান, এসিআইয়ের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ব্র্যাক সিড অ্যান্ড অ্যাগ্রো এন্টারপ্রাইজের চেয়ারম্যান অথবা এমডি, প্রাণ ফুডসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অথবা এমডি, সিটি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের এমডির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে কুষ্টিয়ার রশিদ অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টের স্বত্বাধিকারী মো. আবদুর রশিদ, দিনাজপুরের জহুরা অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী মো. আবদুল হান্নান, নওগাঁর বেলকন গ্রুপের স্বত্বাধিকারী মো. বেলাল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের এরফান গ্রুপের স্বত্বাধিকারী মো. এরফান আলী, বগুড়ার কিবরিয়া অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মো. গোলাম কিবরিয়া, নওগাঁর মফিজ উদ্দীন অটোমেটিক রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী তৌফিকুল ইসলাম, বগুড়ার আলাল অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টের আলাল আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নুরজাহান অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী মো. জহিরুল ইসলাম, বগুড়ার খান অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী পুটু মিয়া, কুষ্টিয়ার মেসার্স দাদা রাইচ মিলের মো. আরশাদ আলী, নওগাঁর মজুমদার অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী ব্রজেন মজুমদার, নারায়ণগঞ্জের সিটি অটো রাইস অ্যান্ড ডাল মিলস এবং নওগাঁর ম্যাবকো হাইটেক রাইস ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান- এমডির বিরুদ্ধে মামলা করেছে কমিশন।
এ ছাড়া টয়লেট্রিজের (সাবান, সুগন্ধি সাবান ও গুঁড়া সাবান) অস্বাভাবিক দাম বাড়ানোর কারণে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে এসিআইয়ের চেয়ারম্যান, ইউনিলিভার বাংলাদেশের এমডি, স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান বা এমডি, কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি (তিব্বত) ও কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান অথবা এমডি।
ডিমের বাজারে কারসাজির জন্য ছয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলা হয়েছে সিপি বাংলাদেশ কোম্পানির এমডি বা সিইও, প্যারাগন পোলট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডায়মন্ড এগ লিমিটেডের এমডি, পিপলস ফিডের স্বত্বাধিকারী, কাজী ফার্মস গ্রুপের এমডি কাজী জাহেদুল হাসান, ডিম ব্যবসায়ী আড়তদার বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহর বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া মুরগির বাজারে অস্থিরতার জন্য ছয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কাজী ফার্মস গ্রুপের এমডি কাজী জাহেদুল হাসান, সাগুনা ফুড অ্যান্ড ফিডসের পরিচালক, আলাল পোলট্রি অ্যান্ড ফিশ ফিডের এমডি বা সিইও, নারিশ পোলট্রি ও হ্যাচারির পরিচালক, প্যারাগন পোলট্রির এমডি এবং সিপি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রতিযোগিতা কমিশন।
এদিকে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির অভিযোগে কাজী ফার্মস গ্রুপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের দায়ের করা দুই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে সোমবার (২৬ অক্টোবর)। শুনানিতে কাজী ফার্মস কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাাংলা/ইএইচটি/একে