মেয়ের কবরে চিরনিন্দ্রায় শায়িত সাংবাদিক তোয়াব খান
৩ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৩৫
ঢাকা: একুশে পদকপ্রাপ্ত বরণ্যে সাংবাদিক তোয়াব খান চিরনিন্দ্রায় শায়িত হলেন। সোমবার (৩ অক্টোবর) বিকালে তার দাফন সম্পন্ন হয়। সোমবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বড় মেয়ে এশা খানের কবরে তাকে দাফন করা হয়েছে।
এদিন সকালে প্রবীণ এই সাংবাদিকের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় দৈনিক বাংলা কার্যালয়ে। পরে শহীদ মিনারে নেওয়া হয় তার মরদেহ। সেখানে প্রদান করা হয় গার্ড অব অনার। এ সময় সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানায়।
শহীদ মিনার থেকে তার মরদেহ নেওয়া হয় জাতীয় প্রেসক্লাবে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গুলশানের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তোয়াব খানের তৃতীয় জানাজা শেষ মরদেহ নেওয়া হয় বনানীতে। সেখানেই চিরনিন্দ্রায় শায়িত হলেন দেশের সংবাদপত্র জগতের প্রবীণ ও বরেণ্যে এই সাংবাদিক। এ সময় তার আত্মীয় স্বজনরা কবরস্থানে উপস্থিত ছিলেন।
দাফনের সময় তোয়াব খানের ছোটভাই ওবায়দুল কবীর খান জানান, আগামী বুধবার বাদ আসর তোয়াব খানের বনানীর বাসায় মিলাদ মাফফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
গত শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শোক জানিয়েছেন।
সাংবাদিকতায় বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার অধিকারী তোয়াব খানের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৪ এপ্রিল সাতক্ষীরার রসুলপুর গ্রামে। ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক জনতার মাধ্যমে তার সাংবাদিক জীবনের শুরু। ১৯৫৫ সালে তিনি যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। ১৯৬১ সালে তিনি দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক হন।
এরপর ১৯৬৪ সালে যোগ দেন দৈনিক পাকিস্তানে। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি দৈনিক পাকিস্তান থেকে বদলে যাওয়া দৈনিক বাংলার প্রথম সম্পাদক হিসেবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তোয়াব খান ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব ছিলেন। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন। সে সময় তার আকর্ষণীয় উপস্থাপনায় নিয়মিত প্রচারিত হয় ‘পিণ্ডির প্রলাপ’ নামের অনুষ্ঠান।
দৈনিক জনকণ্ঠের শুরু থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পত্রিকাটির উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন তিনি। এরপর নতুন আঙ্গিক ও ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন তিনি। তার শেষ কর্মস্থল নতুন আঙ্গিকে শুরু হওয়া দৈনিক বাংলা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/ইআ