Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিতর্কিত নির্বাচন করে সমোলোচিত হতে চাই না: ইসি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ অক্টোবর ২০২২ ১৮:৫৫

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদেরকে উদ্দেশে বলেছেন, আমরা যে কোনো মূল্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই। কোনো বিতর্কিত নির্বাচন করে আমরা সমোলোচিত হতে চাই না। শপথ নেওয়ার পর থেকে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া।

শনিবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠকে জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার এ সব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব ডিসি-এসপি ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক উপস্থিত ছিলেন।

ডিসি ও এসপিদের উদ্দেশে আহসান হাবিব খান বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে নির্বাচন সুষ্ঠু এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্ব আপনাদের উপর। আপনাদের মনে রাখতে হবে, আপনারা সবাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। নির্বাচন কমিশনের প্রত্যাশা সবাই যেন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব শতভাগ নিরপেক্ষ হয়ে পালন করেন। কখনো দলীয় মনোভাব পোষণ করা যাবে না বা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া যাবে না। দায়িত্ব পালনে প্রার্থী, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কখনো অতি উৎসাহী হয়ে এমন কোনো আচরণ করবেন না যেন আপনাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। আরেকটি বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যদি পূর্ব থেকেই ফৌজদারি বা ক্রিমিনাল মামলা থাকে সেটি ভিন্নভাবে আদালতে স্বাভাবিক গতিতে চলবে। কিন্তু অযথা নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ সব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বচ্ছ মনোভাব দেখাতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী বা নেতাকর্মীদের মধ্যে কোনো ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি না হয় সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে। কোনো প্রার্থীর বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

ইসি কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার বিষয়টিতে আপনারা অবশ্যই গুরুত্ব দেবেন। এখানে কোনো প্রকার ছাড় না দিয়ে আইনগতভাবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিগত সময়ে নির্বাচন পূর্ববর্তী এবং পরবর্তি সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা পরিলক্ষিত হয়। এ বিষয়ে অধিকতর সতর্ক থাকতে হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।’

আহসান হাবিব খান আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নীতিমালা অনুসরণ করে খবর সংগ্রহের জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা সারা দেশব্যাপী কর্মরত থাকেন। তারা নির্বাচনী এলাকার এবং বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের সংবাদ সংগ্রহ করে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার করেন। তাদের কাজে যেন বাধা সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে নিশ্চিত করবেন। নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে, সেটিই গণমাধ্যমকর্মীরা তুলে ধরবে সারাদেশের মানুষের কাছে। মনে রাখতে হবে গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের কাজে অযৌক্তিক বাধাপ্রাপ্ত হলে বিভিন্ন মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করবেন।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় অনেক প্রভাবশালী মহল বা রাজনৈতিক দলের নেতা, সাবেক/বর্তমান মন্ত্রী এমপিসহ নানা মানুষ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নির্বাচনের সময় অনেকে পেশিশক্তি, অর্থশক্তি বা ক্ষমতা প্রদর্শনের চেষ্টা করে। কালো টাকার ব্যবহারে কথাও শোনা যায়। আপনারা চোখ কান খোলা রেখে এই বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করবেন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা না থাকলে কখনোই সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না।’

ইসি মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ‘আমরা চাই প্রশাসন ক্যাডার এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান থাকুক এবং একে অপরের সহযোগী হিসেবে কাজ করুক। এতে নির্বাচনের পরিবেশ সুন্দর থাকবে। প্রার্থী, ভোটার রাজনৈতিক দল, পর্যবেক্ষক থেকে শুরু করে সব মহলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পাবে।’

সারাবাংলা/জিএস/ইআ

আগামী নির্বাচন নির্বাচন কমিশন (ইসি)

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর