Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অক্টোবরেও রিচার্জেবল ফ্যান এবং লাইটের বাড়তি চাহিদা

রাজনীন ফারজানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৫ অক্টোবর ২০২২ ১৩:৪৫

ঢাকা: অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ চললেও কমছে না গরম। সেইসঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীর কোনো কোনো এলাকায় তিন-চার ঘণ্টা আর জেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলে দিনে সাত-আট ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ অফিস-আদালতে কাজের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। গরমে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বেড়েছে রিচার্জেবল ফ্যান ও লাইটের চাহিদা, যা বছরের এই অক্টোবর মাসেও বিদ্যমান।

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন বৈদ্যুতিক পণ্যের ব্র্যান্ডের শো-রুম ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিনই রিচার্জেবল ফ্যান, লাইট ও আইপিএস কেনার জন্য আসছেন ক্রেতারা। তবে ক্রেতার চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান।

রাজধানীর প্রগতি সরণির ভিশন, ওয়ালটন ও সিঙ্গার শো-রুমে ঘুরে দেখা গেছে, এসব দোকানে চাহিদার শীর্ষে রিচার্জেবল ফ্যান ও লাইট। ওয়ালটন শো-রুমের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এবছর লোডশেডিং শুরু হওয়ার পর ব্যাটারিচালিত ফ্যানের বিক্রি বেড়েছে। এখানে ৩ হাজার ৩০০ থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার ৯৯০ টাকার ফ্যান পাওয়া যায়। কিন্তু লোডশেডিং শুরু হওয়ার পর সম্প্রতি তিন হাজার তিনশ টাকার ফ্যানের বিপুল চাহিদার পরও সরবরাহ নেই।’

সিঙ্গার শো-রুম থেকে জানা যায়, অনেক ক্রেতাই রিচার্জেবল লাইট ও ফ্যান কেনার জন্য আসেন। খুঁজে না পেয়ে চলে যান। তবে সবচেয়ে বেশি আসেন আইপিএসের জন্য। কিন্তু সিঙ্গারে আইপিএস-এর প্রোডাকশন বন্ধ থাকার জন্য সেটিও তারা দিতে পারছেন না।

ভিশন শো-রুমের ম্যানেজার সোহেল রানা বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের জন্য রিচার্জেবল ফ্যানের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা বাড়ার কারণে রিচার্জেবল ফ্যান স্টক আউট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু চাহিদা থাকায় সম্প্রতি আবারও উৎপাদন শুরু করা হয়েছে।’

ঢাকার অন্যতম ব্যস্ত এলাকা মৌচাক মার্কেটের পেছনে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলের সামনে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বিক্রির একটি ছোট দোকান রয়েছে লিটন সরকারের। জানালেন, লোডশেডিং বেশি হওয়ায় অন্য বছরের তুলনায় এবার রিচার্জেবল লাইট ও ফ্যান বিক্রি বেড়েছে। এখন প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি ফ্যান ও দুই থেকে তিনটি লাইট বিক্রি হয়। বিদেশ থেকে আমদানি করা এসব ছোট ছোট ফ্যানের দাম আড়াইশ থেকে ১৪৫০ টাকা পড়ে। ছোট ফ্যান দুই ঘণ্টা চার্জে আধা ঘণ্টা থেকে ৪৫ মিনিট চলে। কিছুটা বড় ফ্যান সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা চার্জে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা চলে। দামে কিছুটা কম আর ছোট ফ্যানগুলোর চাহিদাই বেশি।

বিজ্ঞাপন

মৌচাক মার্কেটের সামনে কথা হয় সালমা বেগমের সঙ্গে। মেয়ের জন্য স্বল্পমূল্যে একটি রিচার্জেবল ফ্যান খুঁজছিলেন। আশপাশের এলাকার দোকানগুলোতে দরদাম করছিলেন ফ্যানের জন্য। তিনি জানান, একে গরম তার উপর লোডশেডিং। নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ের অনেক কষ্ট হয়। তাকে একটু স্বস্তি দিতে একটি ছোট ফ্যান খুঁজছেন।

কারওয়ান বাজার থেকে মায়ের জন্য একটি রিচার্জেবল ফ্যান কিনেছেন মো. সুমন ইসলাম। বিদেশি একটি ব্র্যান্ডের এই ফ্যানের দাম পড়েছে তিন হাজার ৬০০ টাকা। অক্টোবর মাসে সাধারণত কেউ ফ্যান কেনে না। সুমন ইসলামও কিনতেন না, কিন্তু এখন প্রচণ্ড লোডশেডিংয়ের কারণে মায়ের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ফ্যানটি কিনতে হয়েছে তাকে।

এমন আরেক ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম। শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে তীব্র গরমের কারণে একটি রিচার্জেবল ফ্যান কিনতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিয়ে দেশি একটি ব্র্যান্ডের ফ্যানটি কিনেছেন তিনি।

এদিকে রিচার্জেবল ফ্যানের দাম বেশি হওয়ায় কিনতে পারছেন না শারমিন সুলতানা। সারাদিন কয়েকবার লোডশেডিংয়ে সাত ও দুই বছরের বাচ্চাদের প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে। সংসারের অতিরিক্ত খরচের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রিচার্জেবল ফ্যান কিনতে না পেয়ে এই মুহূর্তে হাত পাখা দিয়েই কাজ চালাচ্ছেন তিনি।

জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য গত ১৯ জুলাই থেকে সারা দেশে দিনে একবার এক ঘণ্টা লোডশেডিং করার ঘোষণা দেয় সরকার। তখন সেপ্টেম্বর থেকে লোডশেডিং কেটে যাওয়ার কথা বলা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো বলছে, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই দিনে একাধিকবার লোডশেডিংয়ে যেতে হচ্ছে তাদের। এর প্রভাবেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রিচার্জেবল ফ্যান ও লাইটের চাহিদা অনেকে বেড়েছে।

সারাবাংলা/আরএফ/এমও

রিচার্জেবল ফ্যান লাইট লোডশেডিং

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভারত থেকে ফিরলেন ৯ বাংলাদেশি তরুণী
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৩

আজ জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেবেন ড. ইউনূস
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:০৪

সবজি-মুরগির বাজার চড়া, অধরা ইলিশ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১০

সম্পর্কিত খবর