তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়া দ্রুত করতে মানববন্ধন
১৫ অক্টোবর ২০২২ ১৫:৩৮
ঢাকা: তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবিতে প্রতীকী লাশের কফিন নিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান), অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আহা) এবং প্রত্যাশা নামক মাদকবিরোধী সংগঠন।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, বাংলাদেশে বছরে তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে যত দেরি হবে তামাকজনিত মৃত্যু ততই বাড়তে থাকবে। তামাকের ব্যবহার হ্রাসে সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এরইমধ্যে আইন সংশোধনী ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং অংশীজনদের মতামত গ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের এই মহতি উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করতে নানাবিধ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ও পদক্ষেপসমূহ তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক ও অন্যান্য স্বার্থ থেকে সুরক্ষা করতে অস্বীকার বিশেষ করে এফসিটিসি আর্টিক্যাল পাঁচ দশমিক তিন এ তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি এবং বাস্তবায়নে সরকারকে তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত থাকতে সুপারিশ করা হয়েছে।
মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫ দশমিক তিন শতাংশ ( তিন কোটি ৭৮ লক্ষ) তামাক ব্যবহার করে। দেশে তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতায় বছরে ৩০ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়, যা তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের চেয়ে অনেক বেশি। তামাক ব্যবহারজনিত এই ক্ষয়ক্ষতি এবং ভয়াবহতা উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এ লক্ষ্য অর্জনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল এফসিটিসির সঙ্গে সামজস্য রেখে ২০১৬ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারমধ্যে রয়েছে সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা ও সব ধরনের খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করা।
ই-সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ এ ধরনের সকল পণ্য উৎপাদন, আমদানি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৯০ শতাংশ করা ইত্যাদি।
মানববন্ধনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, ডরপ, বিসিসিপি, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, নাটাব, আর্ক ফাউন্ডেশন, এইড ফাউন্ডেশন, উন্নয়ন সমন্বয়, ডাস, টিসিআরসি, বিইআর, মানস, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি, ধূমপান মাদক ও দুর্নীতি বিরোধী ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ