Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিশুদের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে ধারণা দিতে হবে: হানিফ

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর ২০২২ ২১:৪৭

ঢাকা: দেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে শিশুদের পরিপূর্ণ ধারণা দিতে অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বর্তমানে শিশুদের লক্ষ্য জিপিএ ফাইভের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। অভিভাবকরাই ঠিক করে দিক করে দিচ্ছেন এটি। শিশুরা জিপিএ ফাইভের পেছনে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে ক্লান্ত। অথচ বাইরের দেশগুলোতে ক্লাসএইট পর্যন্ত স্কুলে তেমন কোনো পরীক্ষাই নেই। বাচ্চাদের সুযোগ দেওয়া হয়—কার কোন দিকে ইচ্ছা, প্যাশন, সেদিকে মেধার বিকাশ ঘটানোর সুযোগ দেওয়া হয়।’

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘ভোরের পাখি শেখ রাসেল’ এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে বেলা সাড়ে নয়টার দিকে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে গৌরব ’৭১। প্রতিযোগিতায় প্রায় ছয় শতাধিক অংশ নেয়। আলোচনা সভার শেষে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করে সংগঠনটি।

গৌরব ’৭১ এর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনা সভায় অভিভাবকদের উদ্দেশে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আমরা সবাই শিশুদের ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানাতে চাই। আদর্শ মানুষ বানানোর দিকে আমাদের চিন্তা নেই। অথচ তার প্রথম স্কুল তার পরিবার। প্রথম শিক্ষক তার বাবা-মা। দেশে অনেক জ্ঞানীগুণী মানুষ আছেন। কিন্তু আদর্শ মানুষের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। অভিভাবকদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, তাদের ভবিষ্যতে তাদের মেধা বিকাশের সুযোগটা করে দেবেন। নীতিনৈতিকতা শেখাবেন। এই দেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে পরিপূর্ণ ধারণা দেবেন।’

শেখ রাসেল সম্বন্ধে শিশুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শেখ রাসেল জাতির পিতার পুত্র, এটা যেমন সত্য, ঠিক তেমনি মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিষ্ঠুর পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হিসেবে সে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। ছোট্ট শিশু রাসেলকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। আজ যারা গণতন্ত্র, মানবাধিকারের কথা বলেন, সেটি নিয়ে তাদের কোনো কথা নেই।’

তিনি বলেন, ‘আজকে বিএনপি-জামাত দেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। বিভিন্ন সময় হরতাল-অবরোধ করে তারা এই অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছিল, তারা এখনও এটিও করতে চায়। তাদের মোকাবিলা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ বলেন, ‘আজকে যত শিশুকে একসাথে ছবি আঁকতে দেখেছি, এমন কখনো দেখিনি। আমার ছবি তো কেউ আঁকে না। শেখ রাসেলের ছবি এঁকেছো। কেন এঁকেছো জানো? কারণ, বাবার চরিত্রের সব গুণ তার মধ্যে ছিল। শেখ রাসেল বাদামওয়ালাকে নিজের টিফিন দিয়ে দিত। রাসেল বলতো, একটু সোনার বাংলা গাও না। তখন তো সবাই পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত পড়ত।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আগে পতাকার মাঝখানে সোনার মানচিত্র ছিল। রাসেলের একটি ছবিতে দেখা যায়—তার হাতে মানচিত্র ছিল। রাসেল দেশ চাইত। কারণ রাসেল দেশটাকে ভালোবাসতো। এসব কারণেই রাসেলের ছবি আঁকানো হচ্ছে।’

শিশুদের উদ্দেশে অধ্যাপক সামাদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জীবন কতো কষ্টের! তার বাবা-মা, ভাই জামাল-কামালকে হত্যা করা হয়েছে। ছোটোভাই রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে। সেদিন রাসেল নিচে দাঁড়িয়ে ছিল। সে বারবার বলছিল, ‘আমি আম্মার কাছে যাব’। তাকে উপরে নিয়ে যাওয়া হয়। মায়ের পাশেই তাকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা আমাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে, মায়েদের অপমান করেছে, তাদের ষড়যন্ত্রের কারণেই রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে। তারাই আজ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে চাচ্ছে। তোমাদের গানের, ছবি আঁকার আয়োজন করে, মানুষকে ঘরবাড়ি করে দেয়—এই হলো শেখ হাসিনার অপরাধ! এ জন্যই তাকে এখন মেরে ফেলতে চায় তারা।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিবার্তা টুয়েন্টিফোরের সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসিসহ অনেকে।

সারাবাংলা/আরআইআর/একে

আওয়ামী লীগ গৌরব-৭১ শিশু রাসেল হানিফ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর