ওসিসহ ৭ জন বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও অপহরণের মামলার আবেদন খারিজ
২৩ অক্টোবর ২০২২ ২২:৪৯
ঢাকা: রাজধানীর হাতিরঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রশিদ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ইন্সপেক্টর গোলাম মোক্তার আশরাফ উদ্দিনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৩ অক্টোবর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জুলফিকার হায়াতের আদালতে মামলাটি শুনানির জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন মামলার বাদী আদালতে হাজির না হওয়ায় মামলাটি খারিজের আদেশ দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারি রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ৩৩ বছরের এক নারী মামলা দায়েরের আবেদন করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, তানীম রেজা বাপ্পি, সাজিদা তানীম, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামাল ও সাইফুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদিনী একজন পুত্র সন্তানের জননী। গত ১ মার্চ ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে আসামি তানীম রেজা বাপ্পি, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামাল ও ওসি আব্দুর রশিদসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা করেন। ট্রাইব্যুনাল ওসি আব্দুর রশিদকে বাদ দিয়ে তানীম রেজা বাপ্পি, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামালসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানা ঢাকাকে মামলাটি এজাহার হিসাবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ী হাতিরঝিল থানা ৫২ (০৩) ২০২২ এজাহার নেয়। বর্তমানে ওই মামলাটি পিবিআই এর কাছে তদন্তাধীন আছে। উক্ত মামলা হওয়ার পর আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা মামলাটি তুলে নিতে চাপ প্রযোগ করতে অথবা আসামি তানীম রেজা বাপ্পি ও জাবেল হোসেন পাপনকে জামিন করে আনতে চাপ প্রয়োগ করেন। তা না হলে বাদিনীর নাবালক সন্তানকে প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেন।
ওই অবস্থায় গত ২৩ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আসামি তানীম রেজা বাপ্পি, মো. জামাল ও সাইফুল ইসলাম বাদিনীর বাসায় এসে বাদিনীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বলে অথবা তানীম রেজা বাপ্পি ও জাবেল হোসেন পাপনকে জামিন করে আনতে বললে বাদিনী তা অস্বীকার করলে আসামি মো. জামাল বাদিনীর ছেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখেন এবং তানীম রেজা বাপ্পি ও সাইফুল ইসলাম অস্ত্রের মুখে বাদিনীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন। একইভাবে চলতি বছর ৩১ মে রাত সাড়ে ৮টার সময়সহ আরও অনেকবার বাদিনীকে ধর্ষণ করেন। বাদিনী নিজের ও বাদিনীর ছেলের প্রাণনাশের ভয়ে কাউকে কিছুই বলতে সাহস পায় না আসামিদের সব অত্যাচার নীরবে সহ্য করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ৫ জুন সকাল সাড়ে ৮দিকে বাদিনীর বাসায় এসে আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা বাদিনীকে জোরপূর্বক পিবিআই অফিসে নিয়ে যায় এবং আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিন বাদিনীর কাছ থেকে জোর পূর্বক কয়েকটি ব্লাঙ্ক সাদা কাগজ ও ব্লাঙ্ক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন ও তাদের শিখিয়ে দেওয়া মনগড়া বক্তব্য অডিও রেকর্ড করেন এবং লিখিত নেন।
গত ২১ জুলাই বাদিনী শারীরিক ভাবে অসুস্থ বোধ করিলে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেগনেন্সি টেস্ট করালে সাত সপ্তাহের অন্তঃসত্তা বলে জানায়। এরপর বাদিনী নিরুপায় হয়ে গত ২৬ জুলাই পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স আইজিপি মহোদয়ের বরাবর বাদিনীয় ঘটনা তুলে ধরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বাদিনীর অভিযোগের বিষয়ে আসামিরা জানতে পেরে আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা গত ২৮ জুলাই বিকেলে বাদিনীর বাসায় এসে বাদিনীকে অস্ত্রের মুখে বাসা হতে তুলে নিয়ে খিলগাঁও থানাধীন দক্ষিণ গোড়ান ছাপড়া মসজিদ এলাকায় নগর উন্নয়ন সমাজ সেবা সংস্থা সাবেক সালেহা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে মেডিকেল নার্স ও সেখানকার ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসার নামে বাদিনীর শরীর অবস করে বাদিনীর পেটের সন্তানকে হত্যা করে ফেলে দেন।
এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে বাদিনীকে আসামিদের পতিতা ব্যবসার আস্তানায় নিয়ে বিভিন্ন পুরুষ দিয়ে পতিতাবৃত্তি করাবে এবং সোস্যাল মিডিয়াই নানা ধরনের প্রচার চালিয়ে বাদিনীকে হেয় প্রতিপন্ন করানো হবে বলে জানায়। তা না হলে বাদিনীর সন্তান সহ হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে।
সারাবাংলা/এআই/একে