মানিকগঞ্জের সেই আইনজীবীর পক্ষে হাইকোর্টে রিট
২৪ অক্টোবর ২০২২ ২০:৩০
ঢাকা: ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং সহযোগীদের নিয়ে মানববন্ধন করায় মানিকগঞ্জের আইনজীবী মাহাবুবুল ইসলামকে ১৫ দিন আইন পেশা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট করা হয়েছে। রিটে আইন সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, দুদকের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম এ রিট দায়ের করেন।
রিটে মানিকগঞ্জের আদালতে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয় তদন্তের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাহাবুবুল ইসলামের বিষয়ে আইনজীবী সমিতিকে মানিকগঞ্জের জেলা জজের পাঠানো চিঠির বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, গত ১৯ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য মাহাবুবুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন সমিতির সভাপতি জামিলুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক নূরতাজ আলম বাহার। লিখিত এই নোটিশ ১৫ কার্যদিবসের জন্য তাকে আইন পেশা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জানা যায়, ‘ঘুষ, দুর্নীতি আর ন্যায়বিচার এক সঙ্গে চলে না’—এই স্লোগান সংবলিত লিফলেট বিতরণ ও সহযোগীদের নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার জন্য তাকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এই নির্দেশনা পাওয়ার পর পরই তিনি আবারও রাজপথে দাঁড়িয়ে এর প্রতিবাদ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১০ অক্টোবর জেলার আদালত প্রাঙ্গণে মাহাবুবুল ইসলামের নেতৃত্বে মানিকগঞ্জ বারের কয়েকজন আইনজীবী বিচার বিভাগে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এরপর আইনজীবী সমিতি মাহাবুবুল ইসলামকে নোটিশ পাঠায়।
লিখিত নোটিশে বলা হয়, মাহাবুবুর ইসলাম ও তার সহযোগী আইনজীবীদের কর্মকাণ্ডে বার ও বেঞ্চের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রের দ্বাদশ অধ্যায়ের ২০ এর ‘ক’ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছেন।
মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জামিলুর রশিদ খান বলেন, ‘আমরা সবাই ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আইনজীবী মাহাবুবুল ইসলাম প্রতিবাদের নামে তিনি সিঙ্গাইর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার (১৬ অক্টোবর) সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ বিষয়টি জানতে চেয়ে সমিতিকে এক পত্র দিয়েছেন। এ কারণে সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনজীবী মাহাবুবুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে ১৯ অক্টোবর নোটিশ পাওয়ার পরপরই এর প্রতিবাদে আদালত চত্বরের সামনে শহীদ রফিক সড়কে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে প্রতিবাদ করেন আইনজীবী মাহাবুবুল ইসলাম। প্ল্যাকার্ডে তিনি লেখেন, ‘ঘুষের চেয়ে ভিক্ষা উত্তম। করলাম প্রতিবাদ, হইলাম বহিষ্কার। আমাকে ভিক্ষা দিন।’
আইনজীবী মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, ‘ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আদালতের বিচারকরা অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কথায় প্রভাবিত হয়ে আমাকে হয়রানি করছেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে