নিখোঁজের ৩দিন পর বস্তাবন্দি লাশ মিলল বাসার পাশে নালায়
২৭ অক্টোবর ২০২২ ১৯:১৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে নিখোঁজের তিনদিন পর সাত বছর বয়সী মারজান হক বর্ষা নামের এক মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে বাসার পাশে নালায়। খোঁজাখুঁজির মধ্যে পরিবারের সদস্যরা বাসার পাশের নালায় একটি বস্তা দেখে সন্দেহ হলে সেটা তুলে আনেন। বস্তার ভেতরে নিখোঁজ মেয়েটির অর্ধগলিত লাশ মেলে। পুলিশের ধারণা, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে নালায় ফেলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরীর কোতোয়ালী থানার জামালখান এলাকায় ব্রিজ গলিতে বড় নালায় লাশটি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-দক্ষিণ) নোবেল চাকমা।
লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জামালখান এলাকায় দায়িত্বরত এক নৈশপ্রহরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে।
মৃত মারজান হক বর্ষা (৭) নগরীর কুসুমকুমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। তার বাবা আব্দুল হক মারা গেছেন। মা ঝর্ণা বেগম ও সৎ বাবা মোহাম্মদ ইউছুপের সঙ্গে জামালখান সিকদার হোটেলের পেছনে ব্রিজ গলির একটি বাসায় থাকত। তার আরও দুই বোন আছে।
গত সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় বর্ষা। এ বিষয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোতোয়ালী থানাকে অবহিত করা হয়েছিল।
বর্ষার সৎ বাবা মোহাম্মদ ইউছুপ সারাবাংলাকে জানান, দোকান থেকে বিস্কুট কিনতে গিয়েছিল বর্ষা। সন্ধ্যার পরও বাসায় না ফেরায় তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রাতে তারা স্থানীয় কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের কাছে যান। সুমন তাদের কোতোয়ালী থানায় পাঠান। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন। সেখানে শুধু বর্ষাকে গলি দিয়ে বের হতে দেখা যায়। এরপর বর্ষার খোঁজে পুরো এলাকায় মাইকিং করা হয়। কিন্তু তার কোনো সন্ধান কেউ দিতে পারেনি।
বর্ষার ছোট মামা লিটন সারাবাংলাকে বলেন, ‘মেয়েকে হারিয়ে আমরা চারদিন ধরে পাগলের মতো খোঁজাখুঁজি করছি। কোথাও পাচ্ছি না। কেউ বলে সেফটিক ট্যাংকের ভেতরে দেখ। কেউ বলে নালার মধ্যে দেখ। আমার বড় ভাই আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে বড় নালার পাড়ে একটি বিল্ডিংয়ের ছাদে উঠে খুঁজছিলেন। এ সময় তিনি নিচে নালায় একটি বস্তা দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দেন। আমরা নালায় নেমে বস্তা খুলে দেখি, আমার ভাগ্নির লাশ।’
তার অভিযোগ, জামালখান সিকদার হোটেল এলাকায় সুজন নামে এক যুবক বর্ষাকে বিরক্ত করত। বিষয়টি তারা পুলিশকে জানিয়েছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। নিখোঁজের দিনই সম্ভবত হত্যা করা হয়েছে। লাশ কিছুটা গলে গেছে। মনে হচ্ছে, হত্যার আগে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সুজন নামে এলাকার এক সিকিউরিটি গার্ডকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
সারাবাংলা/আরডি/ইআ