১০ মাসে ডেঙ্গু রোগী ৩৬ হাজার, মন্ত্রীর দাবি নিয়ন্ত্রণে আছে
৩০ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৩২
ঢাকা: চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬ হাজার ১৩১ জনে। এরমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ২৪ হাজার ৮৫৩ ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ১১ হাজার ২৭৮ রোগী ভর্তি হয়েছেন।
গত শনিবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৩৪ জন মারা গেছেন। করোনার পর স্বাস্থ্যখাতে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে ডেঙ্গু জ্বর। তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বিশ্বের অন্যান্য ডেঙ্গু আক্রান্ত দেশের উদাহারণ দিয়ে বলেছেন, সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে।
রোববার (৩০ অক্টোবর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর ও সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনা সংক্রান্ত বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
আমাদের দেশে ও এডিস মশা ছিল না। ডেঙ্গু রোগও ছিল না। এটা বাইরে থেকে এসেছে দাবি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘হয়তো প্লেনে করে যাত্রীদের সঙ্গে আমাদের দেশে এডিস মশা প্রবেশ করেছে। আর সে মশা দিনকে দিন প্রজনন করে চলেছে।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলেই অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা ইউরোপে ছিল, ফ্রান্সে দেখা গেছে যে একদিনে সাত থেকে আট হাজার লোক মারা গেছে। এমন তথ্য আমাদের কাছে আছে। ২০১৯ সালের আগে আমাদের দেশে ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা পরিলক্ষিত হয়নি। যে কারণে এ বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা খুব বেশ ছিল না। এখন সে অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা দেখছি, কী কী খাতে আমাদের কী কী ইন্টারভেনশন দরকার বা কী ধরনের আউটপুট দরকার। সে বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে ২০২০ সালে আমরা মোটামুটি সফলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিলাম।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০২১ সালে ২০ হাজারের মতো রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়, মৃত্যুর সংখ্যাও কম ছিল। সেটা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল। কিন্তু এবার এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা আমাদের দেশে মারাত্মকভাবে দেখা গেছে। সেপ্টেম্বরের পর থেকে ডেঙ্গু কমতে শুরু করেছে। প্রতিটি দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ রোগের একটা সম্পৃক্ততা আমরা লক্ষ্য করছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এ বছর অক্টোবরে শেষ হচ্ছে কিন্তু এখনও ডেঙ্গু কমছে না।’
বিভিন্ন দেশের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের থেকে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর অবস্থা অনেক ভয়াবহ। ভারতেও দুইদিন আগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল দুই লাখ। বিশেষ করে কোলকাতায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার অনেক বেশী। ১ অক্টোবর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ২৮ হাজার ১৯৬ জন আক্রান্ত হয়েছে, মালয়েশিয়াতে ৩৭ হাজার ৯৫০ জন, ইন্দোনেশিয়াতে ৯৪ হাজার ৩৫৫ জন, ফিলিপাইনে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৫০ জন। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত (২৬ অক্টোবর) ৩৩ হাজার ৯২৩ জন।’
‘এটা আমাদের জন্য স্বস্তির খবর না। অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে যদিও সংখ্যার দিক থেকে বেশ কম। তিনি বলেন, জনসংখ্যার ঘনত্ব আমাদের এখানের জন্য বড় কারন। এটা মশাবাহিত ভাইরাস। সে কারনে যদি ওই ফিগার দেখি তাহলে আমাদেরকে সফল বলতে হবে, কিন্তু আমি সফল বলছি না।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল ২০২০ সালের চেয়ে নিচে নামিয়ে রাখার। এখানে দুই সিটি করপোরেশেনের মেয়ররা কাজ করছেন। মশা নিধনের যে সকল উপকরণ দরকার, তা বছরের শুরুতেই সংগ্রহ করা হয়। এ ছাড়া লোকবল দরকার তিন হাজার। তারও কিছু দেওয়া হয়েছে।’
সারাবাংলা/জেআর/ইআ