‘মজুত গ্যাসে চলবে সাড়ে ১০ বছর’
১ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৩১
ঢাকা: বিদ্যুৎ, জ্বলানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে বর্তমানে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুত রয়েছে ৯ দশমিক ০৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। সেখান থেকে দৈনিক গড়ে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট উৎপাদন বিবেচনায় অবশিষ্ট মজুত গ্যাসে প্রায় ১০ বছর ৮ মাস চলবে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনে শহীদুজ্জামান সরকারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ‘বাপেক্স ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটর ত্রিডি সার্ভে করেছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাপেক্স ভূ-তাত্ত্বিক সার্ভে করেছে ৪ হাজার ৭০ বর্গকিলোমিটার। ২০০৯ থেকে ২২ সালের মধ্যে ১৫টি নতুন এসট্রাকচার আবিষ্কার করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার এসব সার্ভে না করলে কিন্তু গ্যাস আবিষ্কার হতো না। আর বিএনপি আমলে তারা মাত্র তিনটি এসট্রাকচার করে। বিএনপি-জামাত সরকার আসার পরে বাপেক্স একটি এবং ওআইসি একটি করে অনুসন্ধান কূপ খনন করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরে ১৩টি অনুসন্ধান কূপ খনন করেছি। উন্নয়ন কূপের ক্ষেত্রে বিএনপি করে ছয়টি, আমরা করেছি ১১টি।’
এ সময় তিনি বিএনপি-জামাত সরকার ও আওয়ামী লীগ সরকারের কাজের তুলনা করেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি সরকারের সময় যেখানে দৈনিক ১৪ এমএনসিএফ গ্যাস উৎপাদন হতো, সেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৩৯ দশমিক ৮৯ থেকে ১৪৫ এমএনসিএফ গ্যাস উৎপাদন করতে সক্ষম হই। ২০০৯-১২ সালের মধ্যে আমরা ১০০০ এমএনসিএফ গ্যাস বাড়াতে পেরেছি। আমরা মোট ২ হাজার ৭০০ এমএনসিএফ থেকে পর্যায়ক্রমে ২ হাজার ৩০০ এমএনসিএফ গ্যাস উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি। যেখানে বিএনপি আমলে তারা উৎপাদন করত মাত্র ১ হাজার ৩০০ এমএনসিএফ। কিন্তু আমরা আরও ২৫০ এমএনসিএফ গ্যাস পাব। ২০০৯-২২ সালের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট পাওয়ার গ্যাস সেক্টরে যোগ হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি কানেকটিভিটি হয়েছে প্রায় আড়াই হাজারের ওপর।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিএনপি-জামাত জোট সরকার মনে করত, বাংলাদেশ গ্যাসের ওপরে ভাসছে। তাই তারা বিদেশে গ্যাস দিতে চাইছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিশেষ করে শেখ হাসিনা প্রবল বাধা না দিলে আমরা আরও ১০ বছর আগে দেউলিয়া হতাম।’
তিনি বলেন, ‘একটি চুলার দুটি বার্নারে এক মাসে যে গ্যাস ব্যবহৃত হয় তা যদি আমরা গার্মেন্টসে দিই তাহলে দেড়শ লোকের কর্মসংস্থান হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে ২৫ হাজার মেগাওয়াটে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি বেড়েছে, সাপ্লাইয়ের চেয়ে ডিমান্ড বেড়েছে। বাকি যে ঘাটতি আছে তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।’
গ্যাস-বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি আমলের তুলনা দেওয়ায় বিএনপির এমপি হারুন উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আপনি প্রশ্নত্তোর দেওয়ার সময় বিএনপি সরকারের তুলনা করতে গিয়ে বদনাম করছেন কেন? আমি প্রকাশ্যে জানতে চাই, বিএনপি সরকার বিদেশে যে গ্যাস রফতানির চুক্তি করেছিল তার কোনো দলিল আপনার কাছে আছে কি? আমরা জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা করতে চাই। আজ গ্রামের মানুষ হাহাকার করছে। মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না।’
হারুনের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ‘নাইকো মামলা নিয়ে আমাদের হাতে প্রমাণ আছে। তারেক জিয়ার বন্ধু এ বিষয়ে ওপেনলি সাক্ষাৎকার দিয়েছে এফবিআইয়ের কাছে। আমি অনুরোধ করব, আমাকে একটা দিন সময় দিন। আমি খোলাখুলি বিএনপির আমলের গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিয়ে দুর্নীতির কথা বলব।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম