দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সরকার: প্রধানমন্ত্রী
২ নভেম্বর ২০২২ ২৩:০০
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাস অতিমারির কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রীর উৎপাদন ও সরবরাহ কমেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। তবে সরকার বৈশ্বিক ও অর্থনৈতিক নানারকম দুর্যোগ মোকাবিলা করে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রয়েছে।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনে মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক অর্থনীতির এমন টালমাটাল অবস্থায় ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার চরম আশঙ্কা রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে দেশের আপামর জনসাধারণের জীবনমান স্বাভাবিক রাখতে ও দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে রাখার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বাজার মনিটরিং, পর্যাপ্ত খাদ্য সংগ্রহ ও মজুদকরণ এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রাকে স্বাভাবিক ও সচল রাখতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া খাদ্য মন্ত্রণালয় খাদ্যশস্যের বাজারের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং দরিদ্র ও নিম্ন মানুষের কষ্ট লাঘবের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। পাশাপাশি দেশীয় বাজারে খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ রাখার জন্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে জি টু জি পদ্ধতিতে সর্বমোট ৫ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং ৬ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির চুক্তি করা হয়েছে। আমদানির লক্ষ্যে ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব চাল ও গম দেশে প্রবেশ শুরু হয়েছে। জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি-২০২০ অনুসারে দেশে ১০ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য (চাল ৮ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন এবং গম ২ লাখ মেট্রিক টন) মজুত রাখার কথা থাকলেও বর্তমানে এর চেয়ে বেশি রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে সর্বমোট ১৬ দশমিক ৪৩ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে। নিরাপদ খাদ্য মজুদ গড়ার মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার মান সচল রাখার প্রয়াসে ২০২২-২৩ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণভাবে ২২ দশমিক ৯০ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ১ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন গম সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ওএমএস দোকান/ট্রাকসেল কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে ২ হাজার ৩৭৩টিতে উন্নীত করা হয়েছে এবং উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ওএমএস কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অংশ হিসেবে পল্লি এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় প্রতিকেজি চাল ১৫টাকা দরে পরিবার প্রতি মাসে ৩০ কেজি হারে বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে ৫০ লাখ ১১ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বছরের কর্মাভাবকালীন পাঁচ মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর এবং মার্চ-এপ্রিল মাসে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে ছয়টি অনুপুষ্টি (ভিটামিন-এ, বি-১, বি-১২, আয়রন, জিংক ও ফোলিক এসিড) সমৃদ্ধ পুষ্টিচাল বিতরণ করা হচ্ছে।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম