ঝুঁকিপূর্ণ লিফটে শিক্ষার্থীদের ওঠা-নামা, শঙ্কা দুর্ঘটনার
৬ নভেম্বর ২০২২ ১২:১৭
বশেমুরবিপ্রবি: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) জগদীশ চন্দ্র বসু দশতলা একাডেমিক ভবনের লিফট দিয়ে ওঠা-নামা করে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী। তবে সেই লিফটে রয়েছে নানা সমস্যা। ফলে সময়মতো শ্রেণিকক্ষে পৌঁছাতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। আর দেরিতে যাওয়ায় ক্লাসে ঢুকতেও পারেন না অনেক শিক্ষার্থী। এ পরিস্থিতিতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা করেছেন অনেকে। তাই দ্রুত লিফটির মেরামতের দাবি শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু দশতলা একাডেমিক ভবনের ওঠা-নামার জন্য তিনটি লিফট রয়েছে। এই লিফট ৩০ বিভাগের প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর ভবনে ওঠা-নামা করেন। ফলে প্রতিটি লিফটের সামনে দিনের অধিকাংশ সময়ে শিক্ষার্থীদের লম্বা লাইন থাকে। লিফটে ১ হাজার কেজি ধারণ ক্ষমতার কথা উল্লেখ থাকলেও মাত্র ৬-৭ জন নেওয়ার পরে আর লোড নেয় না। আবার দ্রুত ক্লাসে পৌঁছানোর জন্য চাপাচাপি করে অনেক শিক্ষার্থী লিফটে উঠলে দেখা দেয় যান্ত্রিক গোলযোগ। ফলে সেখানে আটকা পড়ে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘক্ষণ আটকা থাকার পর বের হতে পারেন না তারা। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে তৈরি হয় আতঙ্ক। অপরদিকে শারিরীকভাবে দুর্বল বা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য লিফট ব্যবহার আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে লিফটে ভারী মালামাল বহন করা নিষেধ করা হলেও বিভিন্ন বিভাগের কর্মচারীরা ও নির্মাণ শ্রমিকেরা প্রতিনিয়ত এসব মালামাল নিয়ে উঠানামা করছেন। এতে প্রতিদিন নানা দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে ক্লাস ও পরীক্ষা দিতে যাওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা জানান, লিফটে কোনো যান্ত্রিক সমস্যা থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষকে সেটা খতিয়ে দেখা উচিত। তাছাড়া কর্মচারীদের মালামাল বহনের বিষয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। এমন ত্রুটিপূর্ণ লিফট দিয়ে উঠা-নামা করারটা ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ যেকোনো সময় বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সালমান বলেন, ‘আমাদের আট তলায় ক্লাস হওয়ার কারণে প্রতিদিন লিফট ব্যবহার করে থাকি। তবে এই লিফটগুলোর ধারণ ক্ষমতা কম ও লিফটের সংখ্যা তুলনায় শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় প্রায় প্রতিদিন ক্লাসে পৌঁছাতে দেরি হয়। এতে অনেকদিন শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত শিক্ষক ঢুকতে দেয় না। তার ওপর দুর্ঘটনার ঝুঁকি তো রয়েছে।’
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক। আমরা ব্যাপারটি আমাদের বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী সরাফত খান বলেন, ‘আমরা দ্রুত পর্যবেক্ষণ করে দেখছি। কোনো ত্রুটি থাকলে আমরা তা সংশোধন করব। আর কেউ যেন ভারি মালামাল নিয়ে লিফটে প্রবেশ করে সে বিষয়ে কর্তব্যরত লিফটম্যানকে আরও সচেতন হতে বলব।’
এছাড়া লিফট সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘লিফট সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এখনো জায়গা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত আবেদন জানায়, আশাকরি লিফট সংখ্যা বাড়াতে পারব।’
সারাবাংলা/এনএস