Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আলোচনা করে ঠিক করে ফেলব, সামনে কী হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ নভেম্বর ২০২২ ১৬:০৩

ঢাকা: ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অতীতের মতো স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ চালাবে কি না এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের পর কী হবে?’— গণতন্ত্র মঞ্চের দুই শীর্ষ নেতা জোনায়েদ সাকি ও মাহমুদুর রহমান মান্নার এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যে কথাটি আপনারা বলেছেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কথা— এর পরে কী হবে?’

‘আসুন, আপনারাও প্রস্তাব দিয়েছেন, আমরাও প্রস্তাব দিচ্ছি— আলোচনা করে আমরা ঠিক করে ফেলব, সামনের দিনে কী হবে? কীভাবে আমরা এগোতে পারব।’

রোববার (৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘যুগপৎ আন্দোলন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা আয়োজন করে ‘নাগরিক ঐক্য’।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদেরকে লড়তে হবে আমাদের স্বার্থে নয়। আমাদেরকে লড়তে হবে দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে। কিছুক্ষণ আগে মান্না বলেছেন যে, মন্ত্রী বানাতে হবে— এমনটি না। আমরাও বলি- আমদের মন্ত্রী বানাতে হবে না, আমাদের ক্ষমতায় দিয়েন না। কিন্তু পরিবর্তনটা আনুন। এ দেশের মানুষকে বাঁচতে দিন। এ দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার পূরণ করার একটা ক্ষেত্র তৈরি করে দিন।’

‘এ অবস্থায় আসুন আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে লড়ি। এটা হচ্ছে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। আমি অত্যন্ত আশাবাদী, আমি বিশ্বাস করি— আমরা পেরেছি তো অতীতে বহু আন্দোলনে। ৪৭ সালে একটা ঘটনা ঘটেছিল, ১৯৫২ সালে আমরাই তো ভাষা আন্দোলন করেছি, ১৯৯০ সালে গণআন্দোলন করেছি, আমরা তো তার আগে ৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান করেছি। ৭১’ এ স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি। এক সঙ্গে করেছি এবং সফল হয়েছি’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘যে কথাটি এখানে আলোচনা হয়েছে, কোন কোন দাবি এবং কোন লক্ষ্য নিয়ে আমরা ঐক্য করব বা যুগপৎ আন্দোলন করব? সেটা তো আমরা ইতোমধ্যে শুরু করেছি। এ কথা আবারও পরিষ্কার করে জোর দিয়ে বলতে চাই- আমরা দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করতে চাই যুগপৎভাবে। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত এবং সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা এগিয়ে চলছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সবাই একসঙ্গে— সেটা জোটগতভাবে করতে হবে এমনটা না, আমরা যুগপৎভাবে আন্দোলন করে এই ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার কী হবে না, হবে। নির্বাচনকালীন সরকার কী হবে, না হবে— সেটা আমরা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে ফেলব। এটা খুব বেশি সমস্যা হবে বলে মনে করি না।’

জাতীয় সরকার ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের পর নির্বাচনে জয়লাভ করলে সেই নির্বাচনে যারা আসেবন, সব দলের সঙ্গে আমরা আলোচনা করে জাতীয় সরকার গঠন করতে পারি। এ ধরনের প্রস্তাব… এগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি, কথা বলতে পারি। অর্থাৎ এগুলো এখনো প্রস্তাবের মধ্যেই আছে। আমি সেই কারণেই মান্না সাহেবকে ফোন করেছিলাম, সাকি সাহেবকে ফোন করেছিলাম যে, আমাদের বসা উচিত এবং দ্রুত এ বিষয় ফায়সালা করে ফেলা উচিত।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো একটা বিষয়ে একমত হয়েছি যে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য যুগপৎ আন্দোলন করব। সুতরাং বাকি যে সমস্যাগুলো আছে, এগুলো বসে আলোচনা করে। অবশ্য এগুলোকে সমস্যা বলি না আমি। যে ইস্যুগুলো আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করে ঠিক করে ফেলব।’

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে জনগণ আমাদের থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। বরিশালের সমাবেশ, খুলনার সমাবেশ, ময়মনসিংহের সমাবেশ— মানুষ সমস্ত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে সমাবেশে এসেছে। বরিশালের সমাবেশের দুই দিন আগে সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ঘাটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ সাঁতরে নদী পার হয়েছে। পর পর দুই রাত তারা খোলা আকাশের নিচে ঠান্ডায় শুয়ে থেকেছে। মিডিয়ায় এগুলো নিয়ে নিউজ হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছি এই সমাবেশগুলো থেকে। আমাদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে। অনেক নিগৃহীত, অনেক নির্যাতিত আমাদের দল। আমাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা। এই আজকেই দেখুন- বরিশাল থেকে লঞ্চে করে ফিরছিলেন আমাদের মহিলা দলের নেত্রী। লঞ্চ থেকে নেমে তিনি বাসার দিকে রওনা দিয়েছিলেন। পথিমধ্যে তাকে আটক করে নিয়ে গেছে। জানি না এখন পর্যন্ত তাকে কেন ধরেছে, কী জন্য ধরে নিয়ে গেছে?’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী পরিষদের সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম মামুন ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম।

সারাবাংলা/এজেড/এনএস

টপ নিউজ বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর