Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রসিক নির্বাচন: আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন কে?

রাব্বি হাসান সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১০ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৩০

রংপুর: রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জোরেসোরে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এরমধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বর্তমান সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার প্রার্থীতা নির্ধারিত থাকায় স্বস্থিতে আছেন তিনি। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্যান্য দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে নানা কর্মসূচি পালন করছেন। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সিটি করপোরেশনের কে হবেন পরবর্তী মেয়র রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে চলছে আলোচনা।

বিজ্ঞাপন

রংপুর সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে গত ৭ নভেম্বর (সোমবার)। এ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর। বাছাই ১ ডিসেম্বর, প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ ডিসেম্বর, আর প্রতীক বরাদ্দ ৯ ডিসেম্বর।

এদিকে নির্বাচনের সময় যতো ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে উত্তেজনা। মাঠে-ঘাটে, হোটেল-রেস্তোরাঁয়, হাট-বাজারে, অফিস-আদালতে আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে সিটি নির্বাচন। তবে মেয়রপ্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ এখনো তাদের প্রার্থী মনোনয়ন দেয়নি। ফলে একাধিক প্রার্থীর মধ্যে কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন তা নিয়ে আলোচনা এখন সবচেয়ে বেশি।

দলীয় সূত্র জানা গেছে, আগামী দু-এক দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড রসিক মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের আবেদনপত্র জমা নেবে এবং দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ওই বোর্ডে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা শোডাউন, আলোচনা সভাসহ নানা কৌশলে প্রচারে ব্যস্ত থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু মনোনয়ন পাচ্ছেন এমন গুঞ্জন রয়েছে কেন্দ্র থেকে।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আসন্ন রংপুর সিটি নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী হিসেবে দলের কাছে নৌকার মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন রাজনীতির কারণে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রত্যাশার কারণে আগামী সিটি নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা দায়িত্ব দিলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।

রাজু আরও বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই আমার। তবে দলীয় প্রধান যদি আমাকে নির্বাচন করতে বলেন তাহলে নির্বাচন করতে প্রস্তুত আছি।’

বিজ্ঞাপন

অ্যাডভোকেট রাজু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রংপুরের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। রংপুরকে আরও ঢেলে সাজানোর জন্য আওয়ামী লীগের মেয়র দরকার।’

দীর্ঘদিন থেকেই পুরো নগরীর মূল সড়কসহ অলিগলিতে ফেস্টুন লাগিয়ে সিটি নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়ে আসছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষারকান্তি মণ্ডল। তিনি নিজেকে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচার বিলবোর্ড লাগিয়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন নগরীতে। একইসঙ্গে নগরীর সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রচারপত্র বিলি করছেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মেয়র ছাড়া রংপুর সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আমাকে যদি মনোনয়ন দেন আমি রংপুর সিটি করপোরেশনের উন্নয়নের জন্য স্বচ্ছভাবে কাজ করব। রংপুর সিটি করপোরেশনকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে স্বপ্ন দেখেছেন, সেগুলো বাস্তবায়ন করব।’

এছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাফিউর রহমান সফিও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নিজের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। রংপুর নগরিকে যানজট, জলাবদ্ধতামুক্ত করে জবাবদিহিতামূলক ও পরিচ্ছন্নভাবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা সফি বলেন, ‘দলীয় প্রধান মনোনয়ন দিলে শতবছরের জন্য পরিকল্পিত ও বসবাস যোগ্য নগরী গঠনে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করব।’

দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে শোডাউন করছেন বর্তমান সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ছবি: সারাবাংলা

দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে শোডাউন করছেন বর্তমান সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ছবি: সারাবাংলা

সাফিয়ার রহমান সফি বলেন, ‘রংপুর সিটি করপোরেশন আয়তনে বড় হওয়ায় স্বল্প সময়ের পরিকল্পনা নিয়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়। এছাড়া কৃষিভিত্তিক অঞ্চল হলেও কৃষিবিষয়ক কোনো কল-কারখানা নেই। ফলে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতেও সমস্যা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিত নগরীর জন্য ইতিমধ্যে যোগাযোগ, সড়ক বাতি, ফুটপাত ও এলাকাভিত্তিক সড়কগুলো সংস্কার হলেও যা কিছুদিনের মধ্যে অনুপযোগী হয়ে যাবে। এজন্য এগুলো উন্নয়নে শত বছরের পরিকল্পনা নিয়ে করতে হবে। এরমধ্যে এখনই নগরীর জলাবদ্ধতা সৃষ্টিকারী একমাত্র ক্যানেল শ্যামাসুন্দরীকে সংস্কার করা অতীব জরুরী হলেও নানা কারণে হচ্ছে না। সেটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সংস্কার করা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে একটি প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা।’

আওয়ামী লীগের এই মেয়রপ্রার্থী বলেন, ‘রংপুর বিভাগে গ্যাস আসছে কিন্তু নগরবাসী যাতে গ্যাসের সুবিধা পায় সেই বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। গ্যাসের ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে শিল্প কারখানার একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে।’

এছাড়া মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আতাউজ্জামান বাবু, মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক, মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এম এম মজিদও নিজেকে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিলবোর্ড লাগিয়ে ও বিভিন্ন স্থানে সভা করে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আতাউজ্জামান বাবু বলেন, ‘রংপুর নগরীর সমস্যাগুলো সমাধানে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা চেষ্টা করেননি। আমি নগরীর সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলছি। আমার পক্ষে নগরবাসীর ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। তারা আমাকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান এবং নির্বাচনে জয়ী করে তাদের চাওয়াগুলো পূরণ করতে চাই।’

মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শ্রমিক নেতা এম এ মজিদ বলেন, ‘রংপুর নগরীকে যানজটমুক্ত, পরিচ্ছন্ন, দুর্নীতিমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে আমার ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে।’

এদিকে আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা হয়েও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রকৌশলী লতিফুর রহমান মিলন। তিনি কোতয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশনের রংপুর জেলা ও বিভাগীয় সভাপতি।

যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে বিজয়ী হলে রংপুরে আধুনিক কৃষিভিত্তিক শিল্প নগরী, তরুণদের জন্য বিশেষভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।’

সারাবাংলা/এনএস

আওয়ামী লীগ রংপুর সিটি করপোরেশন

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর