ঘুষ চাওয়ার অডিও ফাঁস, পুলিশের এসআই’কে প্রত্যাহার
১১ নভেম্বর ২০২২ ০৯:১৪
রাজশাহী: রাজশাহীতে আসামির কাছ থেকে ঘুষ চাওয়ার একটি অডিও ছড়িয়ে পড়লে এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) প্রত্যাহার করা হয়েছে। এক মামলার একাধিক আসামির কাছে থেকে ঘুষ চেয়েছিলেন তিনি। ওই উপ-পরিদর্শক নগরীর রাজপাড়া থানায় কর্মরত ছিলেন। তার নাম মো. ওয়ারেশ।
বিষয়টি নজরে এলে এই এসআইকে গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে, গত বুধবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সামাজিক মাধ্যমে আসামির সঙ্গে তার ফোনালাপের একাধিক রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মহানগর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘অডিওটি আমরা শুনেছি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিওতে রাজপাড়া থানার এসআই ওয়ারেশ বলতে শোনা যায়, ‘ওসি স্যারের জন্য একটা বাজেট কইরো। ওসি স্যারকে দিতে হবে, না হলে সমস্যা হবে।’
এর আগে, গত ৩ নভেম্বর রফিক নামের এক আসামিকে ব্যক্তিগত নম্বর থেকে ফোন দেন এসআই ওয়ারেশ। তখন তিনি বলেন, ‘কিছু খবর দিলে তাদের গ্রেফতার করা হবে না। ওইদিন তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নেন তিনি। পরে আরও তিন হাজার টাকার জন্য ফোন দিয়ে একটি বিকাশ এজেন্ট নম্বরে নিয়ে যান। একই মামলার ৩ নম্বর আসামির কাছ থেকে দুই দফায় বিকাশের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা নেন।’
গত মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) আসামি রফিক আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাজপাড়া থানার ডিউটি অফিসারের কাছে সন্ধ্যায় জামিনের রিকল জমা দেন। বিষয়টি এসআই ওয়ারেশ জানতে পারলে রফিককে ফোন দিয়ে রিকল ডিউটি অফিসারকে দেওয়ার জন্য গালাগালি করে। রিকলটি তার হাতে না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন তিনি। পরে সন্ধ্যায় মামলার ৩ নম্বর আসামি কাঁচুর মুঠোফোনে কল দিয়ে ঘুষ দিয়ে চাঁদা দাবি করেন এসআই ওয়ারেশ। জামিন নেওয়ার কারণে ঘুষের টাকা দিতে অস্বীকার করেন কাঁচু।
নাম প্রকাশ না করে আসামিদের একজন বলেন, ‘আমাদের কাছে কথায় কথায় টাকা চেয়েছেন তিনি। দিন-রাত নেই সব সময় ফোন দিয়ে টাকা চেয়েছেন। মামলার পর থেকে এসআই ওয়ারেশের অত্যাচার ও ঘুষ দাবি করায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি।’
এ বিষয় উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ারেশ জানান, কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হলে এ ধরনের অদ্ভুত কথা ছড়িয়ে দেয়। আমি এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তারা জামিন নিয়ে যাবার দিন রিকল দিয়ে যেতে বলে ছিলাম। তারা আমাকে অনেক সময় দাঁড়িয়ে রেখেছিলেন। আমি মন খারাপ করে তাদের একটু গালি দিয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে হেয় পতিপন্ন করতে অডিওটি ছড়ানো হয়েছে। এটি মিথ্যা অডিও। দরকার পড়লে আমি তাদের আপনাদের সঙ্গে মিট করিয়ে দিতে পারি।’
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘যদি কেউ ঘুষ নিয়ে থাকে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি থানা ছেড়ে চলে গেছেন।’
সারাবাংলা/এনএস
সারাবাংলা/এনএস