যশোরে প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের জনসভায় নেতাকর্মীদের ঢল
২৪ নভেম্বর ২০২২ ১৩:৪১
ঢাকা: টানা মেয়াদে সরকারে থেকে দেশের আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামোগত খাতে দৃশ্যমান উন্নয়ন অঙ্গীকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জয়গান নিয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও জনতার দুয়ারে যশোরে গেলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি বছরেই পদ্মা সেতু, মধুমতি সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে যশোরসহ ওই জনপদের বিভিন্ন জেলার মানুষ বিভিন্নভাবে উপকারভোগী হয়েছে। তাই করোনাকালের ঘরবন্দির ঘেরাটোপ থেকে জনতার কাতারে সরকার ও দলের বার্তা পৌঁছে দিতে ভোটের মাঠে নামলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) যশোর থেকে শুরু হচ্ছে জনতার দুয়ারে গিয়ে সরকার ও দলীয় বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পথচলা। এই জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আগামী দিনে তার সরকারের লক্ষ্য উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের কথা শোনাবেন। যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে বিশাল জনসভায় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। জনসভায় বিপুল লোক সমাগমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে যশোরসহ আশপাশের এলাকা থেকে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে। এরপর ৪ ও ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারে দলীয় জনসভায় ভাষণ দেবেন।
এদিন সকাল সাড়ে নয়টায় তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমি’র ‘রাষ্ট্রপতিকুচকাওয়াজ (শীতকালীন) ২০২২’এ যোগ দিতে যশোরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তিনি। সাড়ে দশটায় এই কর্মসূচিতে যোগ এবং বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর দুপুর আড়াইটায় যশোর জেলা স্টেডিয়ামে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান বাহিনী ঘাঁটি থেকে বিকেলে সাড়ে ৪টায় ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
প্রায় আড়াই বছর পর জেলা পর্যায়ে তার রাজনৈতিক এ জনসমাবেশকে ঘিরে নৌকার আদলে বিশাল মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর কোনো জেলা সফরে যেতে পারেননি আওয়ামী লীগ প্রধান। এসময় হয়নি কোনো জনসভাও। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠ যখন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, তখন আবারও জনসমাবেশমুখী ক্ষমতাসীন দলের প্রধান। সবশেষ পাঁচ বছর আগে যশোরে জনসমাবেশ করেছিলেন শেখ হাসিনা।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে পুরো শহরের পাশাপাশি সেজে উঠেছে জেলা স্টেডিয়াম। জনসভাকে ঘিরে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও নেতারাও তৎপর। জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ব্যাপক লোকসমাগমের মাধ্যমে শো-ডাউনের পাশাপাশি দলীয় প্রধান নির্বাচন কেন্দ্রিক বার্তাও দেবেন বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত একেকটি প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে এখন বদলে গেছে যশোরের কপোতাক্ষের জনপদ। শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এখন সম্পূর্ণ চালু হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারত-বাংলাদেশের অন্যতম বড় গেটওয়ে হিসেবে খুলনা-যশোর-বেনাপোল মহাসড়কও নির্মিত হচ্ছে নতুন করে। প্রথম ডিজিটাল জেলার খেতাব পাওয়া এ জনপদের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরটিও এখন আধুনিকায়নের অপেক্ষায়। প্রস্তাবিত রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা, ফাউন্ড্রি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক নির্মাণযজ্ঞসহ একগুচ্ছ প্রকল্প বাস্তবায়নও এখন অপেক্ষায়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের বলেন, ‘যশোর ও এর আশপাশের জেলাগুলোর কোনো মানুষ বাড়িতে বসে থাকবে না। তারা সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতা শুনতে জনসভায় আসবেন। এ অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ শেখ হাসিনার জনসভায় অংশ নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন। এ জনসভাকে কেন্দ্র করে যশোর জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
খুলনা বিভাগে আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘যশোরে শেখ হাসিনার জনসমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তাকে স্বাগত জানাতে এ অঞ্চলের সর্বস্তরের জনগণ প্রস্তুত। করোনার কারণে আওয়ামী লীগ প্রধান ২৭ মাস পর, ঢাকার বাইরে কোনো জনসভায় অংশ নিচ্ছেন।’
গতকাল সন্ধ্যায় যশোর জেলা আওয়ামী লীগের জনসভাস্থল পরিদর্শনে যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনআর/এমও