কর্মবিরতিতে শ্রমিকরা, বরিশালে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ
২৭ নভেম্বর ২০২২ ১৪:০৬
বরিশাল: ১০ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিকদের ডাকা কর্মবিরতির কারণে বরিশালে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শনিবার (২৬ নভেম্বর) দিনগত রাত ১২টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু করে নৌযান শ্রমিকরা। ফলে রোববার (২৭ নভেম্বর) সকাল থেকে বরিশাল নদীবন্দরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীবন্দর ও লঞ্চঘাট থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। আর এতে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
রোববার (২৭ নভেম্বর) সকালে অনেক যাত্রীই ঘাটে এসে লঞ্চ চলাচল বন্ধ দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন। লঞ্চ যাত্রী সুমা বলেন, ‘বাড়িতে যাওয়ার জন্য লঞ্চঘাটে এসেছি। কিন্তু লঞ্চ চলাচল তো বন্ধ। এখন অপেক্ষা করছি দুপুরের মধ্যে যদি ছাড়ে না হলে ভেঙে ভেঙে ট্রলারে করে যেতে হবে।’
বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন জানান, শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে সকাল থেকে বরিশাল নদীবন্দর থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।
বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন বরিশালের সভাপতি আবুল হাসেম মাস্টার বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে সারাদেশে এ কর্মবিরতি শুরু করেছে নৌযান শ্রমিকরা। ফলে গত রাত ১২টা থেকে সারাদেশের সঙ্গে বরিশাল বিভাগে সব ধরনের পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতির এ আন্দোলন লাগাতার চলবে।’
বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন ও নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, ‘শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে সারাদেশে তেলবাহী, বালুবাহীসহ সব পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমরা চাই আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মানা হোক। তবে এখন পর্যন্ত সরকারসহ কোনো পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। আর আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।’
শ্রমিকদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক দেওয়াসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ; খাদ্যভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন;, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা; চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ; বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের উপরে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা।
এছাড়া নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেওয়াসহ ভারতীয় সীমানায় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা; চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সব লাইটারিং জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ পরিবহন অধিদফতরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে।
সারাবাংলা/এমও