Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্থায়ী চাকরির দাবিতে আন্দোলনে রেলের ৭ হাজার শ্রমিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৯ নভেম্বর ২০২২ ১৫:৩৫

ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে রেলভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অধীনে কর্মরত গেটকিপারসহ অন্যান্য শ্রমিকেরা। এ নিয়ে তারা রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের বরাবরে একটি স্মারক লিপিও দিয়েছেন। সেখানে চাকরি স্থায়ীকরণের পাশাপাশি রেলওয়ের আউট সোর্সিংয়ের সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন তারা। দাবি না মেনে নিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শ্রমিকেরা।

বিজ্ঞাপন

দেশের গণপরিবহন মাধ্যমগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারের সবচেয়ে বড় পরিবহন খাত। এই খাতের আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও বিকাশের মাধ্যমে নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ও সময়োপযোগী সেবা দিয়ে আসছে রেলওয়ে। এই সেবা প্রসারিত করতে টেম্পোরারি লেবার রেলওয়ে (টিএলআর) নিয়োগ দেয় রেল। স্থায়ী শূন্য পদের বিপরীতে এসকল শ্রমিক মেকানিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং (গেট কিপার, ওয়েম্যান, লোকো খালাসি, ক্যারেজ খালাসি), সিগন্যালিং, ইলেক্ট্রিক্যাল ও ট্রান্সপোটেশন (গেটকিপার, পোর্টার, পয়েন্টম্যান) এসকল পদে কাজ করে থাকেন। দেশের চার বিভাগে রেলওয়েতে এমন ৬ হাজার ৭২৯ জন শ্রমিক রয়েছেন। শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ দেওয়া এসকল শ্রমিকদের বেতন কাঠামো বিভাগ অনুযায়ী ঠিক করা হয়। শ্রমিকদের বক্তব্য অুনযায়ী, তাদের বেতন বাড়ানো হয় না, কোনো ধরনের ভাতাও তারা পান না। এমনকি ছুটির ক্ষেত্রেও রয়েছে জটিলতা।

বিজ্ঞাপন

পাকশি রেলওয়ের পোর্টার (অস্থায়ী) মো. শফিকুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে রেলওয়ের মহাপরিচালক একটি চিঠি ইস্যু করেছেন, সেখানে তিনি লিখেছেন আউটসোর্সিং সিস্টেম চালু করা হবে। অর্থাৎ টিএলআর সিস্টেম বাতিল করে ঠিকাদারের মাধ্যমে অস্থায়ী শূন্য পদে এসকল শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘ওই চিঠিতে বলা হয়— টিএলআর’দের জন্য চলতি বছর ৮০ কোটি টাকা অর্থের দরকার। এখানে আউটসোর্সিং চালু করা হলে দরকার হবে ১৪০ কোটি টাকা। যারা ১০-১৫ বছর ধরে এসকল দায়িত্ব পালন করে আসছেন তাদের আশা যেকোনো দিন তাদের চাকরি রেলওয়ে স্থায়ী করে নেবে।’

আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘নিয়ম রয়েছে এসকল পদে চাকরির বয়স তিন বছর হলে ওই শ্রমিককে স্থায়ী করার বিষয়ে রেলওয়ে বিবেচনা করতে পারে। ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো গতিবিধি চোখে পড়েনি। এখন আমাদের আউটসোর্সিংয়ের আওতায় দেওয়া হয়, তাহলে আমরা আর রেলওয়ের মধ্যে থাকতে পারছি না। আমাদের বেতনভাতা কতটুকু দেবে, সঠিক সময় দেবে কি না- সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি সারাদেশে সকল টিএলআর’দের চাকরি স্থায়ী করতে হবে। পাশাপাশি আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগের যে চিন্তা করা হচ্ছে তা বাতিল করতে হবে। শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়ে যদি কোনো জটিলতা থাকে তাহলে টিএলআর প্রথা বহাল রেখে বিকল্প চিন্তার সুপারিশ করা হয়েছে।’

এদিকে সারাদেশ থেকে রেলওয়ে শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা ঢাকাতে এসে রেলভবনের সামনে ব্যানার নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের দুইজন প্রতিনিধি রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেন। সেখানে টিএলআর’দের চাকরি স্থায়ী করে আউটসোর্সিংয়ের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান।

বাইরে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া গেটম্যান আবু হোসেন হিরা সারাবাংলাকে বলেন, ‘একটি তৃতীয় পক্ষ আমাদের চালাবে। এটা কেন হবে? আমরা দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়েতে কাজ করছি। রেলওয়ের এ সিদ্ধান্ত আমাদের স্বার্থ পরিপন্থী। এর আগেও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়ে আসছি। রেলওয়ে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। এবার আমাদের ঠিকাদারের হাতে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে রেলওয়ে।’ এ সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচিতে যাবেন বলে জানান তিনি।

এদিকে এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে মহাপরিচাল ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারকে প্রশ্ন করা হলে, এটি অফিস সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সারাবাংলা/জেআর/এনএস

বাংলাদেশ রেলওয়ে

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর