নিচে চাপা পড়া নারীকে নিয়েই ছুটল প্রাইভেটকার, চালককে গণধোলাই
২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:০০
ঢাকা: ধাক্কা দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেওয়ার পর গাড়ির নিচে চাপা পড়া নারীকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে ছুটল এক প্রাইভেটকার। এতে গুরুতর আহত ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাইভেটকার চালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক এক শিক্ষককে গণধোলাই দিয়েছে ক্ষুব্ধ জনতা।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে মোটরসাইকেল আরোহী ওই নারীকে শাহবাগ এলাকায় ধাক্কা দেয় প্রাইভেটকারটি। ঘটনার সময় ওই নারী মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ছিলেন।
শাহবাগ থানা পুলিশ জানিয়েছে— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক জাফর শাহ প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন। শাহবাগ এলাকায় ওই নারীকে চাপা দেওয়ার পর প্রাইভেটকারটি টিএসসি হয়ে নীলক্ষেতের দিকে চলে যায়। এ সময় আহত নারীটিকে টেনে-হিঁচড়ে এক কিলোমিটারের বেশি নিয়ে যায় চলন্ত প্রাইভেটকারটি।
পরে উত্তেজিত জনতা ধাওয়া দিয়ে নীলক্ষেত মোড়ে প্রাইভেটকারটি আটকায়। এ সময় গাড়ির চালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক জাফর শাহ ক্ষুব্ধ জনতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হন।
মৃত ওই নারীর নাম রুবিনা আক্তার (৪৫)। তার দেবর নুরুল আমিন জানান, তাদের বাসা হাজারীবাগের সেকশন এলাকায়। তেঁজগাও থেকে ভাবীকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি শাহবাগ মোড়ে এলে একটি প্রাইভেটকার তাতে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে তার ভাবী মোটরসাইকেল থেকে প্রাইভেটকারের সামনে ছিটকে পড়েন। তখন তার ভাবীর কাপড়চোপড় প্রাইভেটকারের সামনের বাম্পারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। এরপরও প্রাইভেটকারটি না থেমে তার ভাবীকে টিএসসি হয়ে নীলক্ষেত পর্যন্ত টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায়।
শাহবাগ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ জানান, একটি প্রাইভেটকার নারীকে টেনে-হিঁচড়ে অনেক দূরে নিয়ে যায়। হয়ত তার পরনের জামাকাপড় ওই প্রাইভেটকারের সঙ্গে আটকে গিয়েছিল।পরে উত্তেজিত জনতা গাড়টি ভাঙচুর করে। এ সময় প্রাইভেটকারের চালক জাফর শাহ গণধোলাইয়ের কবলে পড়েন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। তার মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী জানান, ২০০৭/২০০৮ সালের দিকে নৈতিক স্খলনের কারণে ওই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়। তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।
সারাবাংলা/এসএসআর/একে