Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস সাময়িক ব্যবস্থা, কোনো স্থায়ী সমাধান নয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৩৭

ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম বলেছেন, সারা পৃথিবীতে পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ। আমাদের দেশে ঠিক তার উল্টো। এখানে ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, সেখানে আমাদেরকে প্রটেকশনের ব্যবস্থা নিতেই হবে। সে কারণে আমরা ফ্লোর প্রাইস দিয়ে সাময়িক একাটা ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শারমিন রিনভী ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম বলেন, ‘দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর লক্ষ্যে কাজ চলছে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হলে সারা পৃথিবীর বাজার এবং নিজেদের বাজার পরিস্থিতি দেশের ভেতরে বসেই দেখা যাচ্ছে। এতে আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ থাকবে না।’

বিএসইসির চেয়ারমান বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রধান সমস্যা কর্মসংস্থান। ভালো লোককে, ভালো বেতন দিয়ে ভালো কাজ ঠিক করে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছিলাম। ঠিক সে সময় এমন এক জায়গায় যুদ্ধ বেঁধে গেল, সারাবিশ্বের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়তে শুরু করল। যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্যাস ও জ্বালানি তেল উৎপাদনকারি দেশের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। যেখান থেকে বেসিক ফুডগুলো বিভিন্ন দেশে যায়, সেই দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে গেলো। তার সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য দেশে প্রভাব পড়তে শুরু করল।’

তিনি বলেন, ‘জ্বালানির ওপর যখন প্রভাব পড়ে, তখন সারা পৃথিবীর অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ে। যুদ্ধ শুরুর পর যে ধাক্কা আসলো তাতে আমাদের সবকিছু অন্যরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো। যেখানে আমাদের বিদ্যুতের সারপ্লাস, সেখানে লোডশেডিংয়ের ধাক্কা আসলো। যে দেশের মানুষ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেই দেশে আমাদেরকে সরকারিভাবে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতো বড় ঘটনা পৃথিবীতে ঘটে গেছে, যা আমাদের কোনো রকমের বিচার-বিশ্লেষণ, ক্ষমতা বা আমাদের কোনো রকম কিছু করার বাহিরে। এই ধাক্কায় যুক্তরাজ্যে তিন প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হয়েছে। চার-পাঁচটা দেশের লিডারশিপ পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। সে রকম পরিস্থিতিতে আমরা পড়েনি।’

বিজ্ঞাপন

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের নিজেদের যদি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হয়ে যায়, তখন আপনারা এখানে বসেই দেখতে পারবেন ঘানায় আজকে চালের দাম কতো বা আমাদের গার্মেন্টস পণ্য কোন দেশ কতো দামে নিতে চায়। আমরা এখানে বসেই সারা পৃথিবীর বাজার এবং নিজেদের বাজার দেখতে পারবো। তখন আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ থাকবে না।’

সেমিনারে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বাজারে জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কম। আমরা মোটামুটিভাবে মানুষের কথা শুনে বিনিয়োগ করি। এটা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া, এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং দক্ষ জনবলের সংখ্যা কম।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের বাজারে অপর্যাপ্ত পলিসি সার্পোর্ট। ব্যাংকের ৬-৯ যে সুদের হার আছে। এর অর্থ হলো আমি ব্যাংক থেকে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবো। কিন্তু বড় কোম্পানিগুলো ব্যাংকের কাছে গেলে ৮ শতাংশ সুদেও ঋণ দেবে। তখন কি তারা পুঁজিবাজারে যাবে। পুঁজিবাজারে আসলে তাকে এর থেকে বেশি হার লভ্যাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে।’

এ ছাড়া, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, ‘আমাদের দেশের অর্থনীতির আকার অনুযায়ী কমোডিটি এক্সচেঞ্জ নেই। খুব তাড়াতাড়ি আমরা ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবো। আমরা ইতোমধ্যে রুলস করে বিএসইসির কাছে পাঠিয়েছি। বিএসইসি অনুমোদন দিলে আমরা আশা করছি শিগগিরই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে পারবো।’

সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সাবেক সভাপতি আজম জে চৌধুরী এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকারস এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সহ-সভাপতি মো.মনিরুজ্জামান।

সারাবাংলা/জিএস/ইআ

পুঁজিবাজার ফ্লোর প্রাইস

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর