Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:৫২

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম

ঢাকা: ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরও তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।’

‘ওই নির্বাচনের ইশতেহারে বলা হয়েছিল- কুরআন সুন্নাহর বিরুদ্ধে কোনো আইন পাশ করা হবে না। সেই সুবাদে আমরা বলতে পারি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়’— বলেন সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা শহিদ হবার জন্য যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, কোনো কিছু পাওয়ার জন্য না। এখন মন্ত্রী পরিষদের কোনো কোনো সদস্যদের বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা স্বীকৃতি বঞ্চিত হচ্ছেন।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দলের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে ও ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবিরের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার গোলাম মাওলা, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম ও ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াদুদ।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ বলেন, ‘যাদের মধ্যে চেতনা আছে তারাই মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশ গড়তে হবে।’

বিজ্ঞাপন

মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘নব্য চেতনা ধারীরা মুক্তিযুদ্ধকে ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কোনো অবস্থাতেই ইসলামের বিরুদ্ধে ছিল না। একটা মহল মুক্তিযুদ্ধকে এবং ইসলামকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম বলেন, ‘ন্যায়-বিচার, সাম্য ও মানবিক মর্যাদার জন্য যুদ্ধ করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য- বাংলাদেশে এই তিনটি জিনিসই অনুপস্থিত।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘স্বাধীনের পূর্বে চাকরিসহ সব ক্ষেত্রে নৈরাজ্য ছিল। এই ৫২ বছরে স্বাধীনতার সুফল পাইনি। ইশতেহারে কুরআন সুন্নাহবিরোধী আইন করা হবে না বললেও সরকার মদ বৈধ করেছে। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য দেশে ইসলামী হুকুমত কায়েম করতে হবে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. খালেকুজ্জামান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করা হয়। বেতন ভাতার জন্য যুদ্ধ করিনি। অধিকার পাওয়ার আশায় মুক্তিযুদ্ধ করেছি।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বলা হলেও প্রয়োগের বেলায় তা অন্য। বরং স্বাধীনতা বিরোধিরাই দেশে দাপটের সঙ্গে বিচরণ করে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক বলেন, ‘অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হলেও তা আজও হয়নি। বরং এই বৈষম্য দিন দিন বেড়েছে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. এমদাদুল হক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। দেশের মানুষ অর্থনৈতিক মুক্তি পায়নি। স্বাধীনতার ৫১ বছরে দুর্নীতি দেখেছি। দেশে দুর্নীতির খেলা চলছে।’

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা চাষী নজরুল ইসলাম কুষ্টিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দু মোত্তালিব খান গাজিপুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সোলায়মান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গফুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হারুনুর রশীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. গোলাম মাওলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সিদ্দিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. এমদাদুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টাঙ্গাইল, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী দবির উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিদ্দিকুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক, মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম মুফতী মোস্তাফিজুর রহমান, মো. সাহাদুজ্জামান মোল্লা, এবিএম রকিবুল হক, মো. আবদুল কুদ্দুস, মো. মিজানুর রহমান, আবুর শোয়াইব খান ও ডা. আতাউর রহমান চৌধুরী।

সারাবাংলা/এজেড/এনএস

ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশ মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর