এবার ১৯ দফা নিয়ে মাঠে নামবে ইসলামী আন্দোলন
৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:১৬
ঢাকা: এবার ‘১৯ দফা’ নিয়ে মাঠে নামবে দেশের অন্যতম প্রধান ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আগামী সোমবার (২ জানুয়ারি) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সম্মেলন থেকে এ ১৯ দফা ঘোষণা করবেন দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দলটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক দুরবস্থা, নির্বাচন নিয়ে অস্থিরতা, জোট-মহাজোট ভাঙা-গড়ার নিত্য ঘটনা, নীরব দুর্ভিক্ষ— সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য বর্তমান সময় খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ সময়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।’
এই সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কার, রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন ও বৈষম্যহীন উন্নত বাংলাদেশ গড়তে ১৯ দফা ঘোষণা করবে। নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিসহ ১৯ দফা দাবি উপস্থাপন করা হবে সম্মেলনে। দলের আমির তৃণমূলের নেতৃত্বের প্রতি বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করবেন— জানান গাজী আতাউর রহমান।
তিনি জানান, এর আগে ১ জানুয়ারি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মজলিশে শুরার সভা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হবে। পরের দিন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সম্মেলনে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।’
গাজী আতাউ রহমান বলেন, ‘আপনারা লক্ষ্য করেছেন— ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে, জোট-মহাজোটের বাইরে আমরা যে একক ইসলামী ও জনশক্তি গড়ে তোলার কাজ করেছি, তার ফলাফল আসতে শুরু করেছে। এটাকে কী করে কাজে লাগানো যায় এবং আরও ত্বরান্বিত করা যায়, সে বিষয়ে ২ তারিখের জাতীয় সম্মেলন একটি মাইল ফলক হতে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আসন্ন সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তৃণমূলের নেতারা অংশ নেবেন। আমরা ২০২২ পর্যন্ত দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে শক্তিশালী কমিটি গঠন করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলাম। আমাদের লক্ষ্য সাফল্যের মাত্রা স্পর্শ করেছে। এই সম্মেলনে ওয়ার্ড পর্যায়ের বাছাইকৃত নেতৃত্ব এবং এর পাশাপাশি ইউনিয়ন থানা ও জেলা শাখার ঊর্ধ্বতন নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। এই সম্মেলন থেকে দলের আমির আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে করণীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন। নির্বাচনী লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেবেন।’
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘সম্মেলনকে সামনে রেখে দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলাপ করেছি। বহু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। আগামীর পরিকল্পনায় সহযোগী হওয়ার বিষয়ে এক ধরনের বোঝাপড়া হয়েছে। সম্মেলনে সে বিষয়ে এক ধরনের প্রতিফলন দেখা যাবে। একইসঙ্গে আমরা সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলাপ করেছি। তার প্রতিফলনও থাকবে সম্মেলনে।’
তিনি জানান, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অভ্যর্থনা, নিরাপত্তাসহ সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা শেষ হয়েছে। দীর্ঘ দৌড়-ঝাঁপের পর অবশেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহার করার ব্যাপারে প্রশাসনের সম্মতি পাওয়া গেছে।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আক্ষরিক অর্থেই এই সম্মেলন জাতীয় রাজনীতির জন্য একটি বাঁক পরিবর্তনীয় ঐতিহাসিক ঘটনা হতে যাচ্ছে বলে আমাদের বিশ্বাস। জাতীয় সম্মেলন থেকে রাজনীতির যে নতুন মাত্রার সূচনা হবে সেখানে সবার সার্বিক সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আব্দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা খলিলুর রহমান, জিএম রুহুল আমিন, উপাধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম কবির, মুফতী মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস