চবি শিক্ষক সমিতি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি
৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ২৩:০৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধির নির্বাচন চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে চিঠি দিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক আবদুল হক। সভাপতির বিবৃতির প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্তকে শিক্ষক সমিতির মর্যাদা ও চেতনার পরিপন্থী উল্লেখ করে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সজীব কুমার ঘোষ।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে এই বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। বিবৃতিতে বলা হয়, গত গত ৩০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নামে সহ-সভাপতি প্রফেসর আবদুল হক (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) প্রদত্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্তের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনমূলক ও শিক্ষক সমিতির আদর্শিক চেতনার পরিপন্থী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের মর্যাদা বজায় রাখার জন্য এই অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানানো জরুরি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত সোমবার (১২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় প্রায় তিনশত শিক্ষকের উপস্থিতিতে নিম্নলিখিত কয়েকটি বিষয় দাবি আকারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্তগুলো হলো- আগামী জানুয়াররি ২০২৩ সময়ের মধ্যে চবি সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো। উল্লেখ্য যে, সাধারণ সভার শুরুতে প্রশাসনের পক্ষে চবি সম্মানিত রেজিস্ট্রার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে জানুয়ারি ২০২৩ এর মধ্যে সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। সাধারণ সভায় প্রশাসনের এই প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থা প্রকাশ করা হয়, শিক্ষকদের পদোন্নতির আবেদনসমূহ দ্রুততার সঙ্গে নির্বাচনী বোর্ড আহবান করে নিষ্পত্তি করা এবং কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া কোন শিক্ষকের জ্যেষ্ঠতা যাতে লঙ্ঘিত না হয়, সে ব্যাপারে জোর দাবি জানানো।
পূর্বে যাদের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘিত হয়েছে তাদের ব্যাপারে আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো সুযোগ থাকলে সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ জানানো, শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের বিষয়টির স্থায়ীভাবে সমাধানের লক্ষ্যে সহকারী অধ্যাপক হতে সহযোগী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক হতে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রাপ্তির তারিখ বর্তমানে প্রচলিত সিন্ডিকেট সভার তারিখের পরিবর্তে প্রার্থীদের আবেদনের তারিখ হতে কার্যকর করার আইনগত উদ্যোগ গ্রহণের জোর দাবি জানানো, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণী সর্বোচ্চ ফোরাম সিন্ডিকেট সভা। এ সভার সঙ্গে সাধারণ শিক্ষকদের স্বার্থ জড়িত থাকে। তাই প্রশাসন কর্তৃক সিন্ডিকেট সভা আহ্বানে শিক্ষক সমিতির কোনো আপত্তি নেই। তবে ওই সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক স্বার্থ পরিপন্থী কোনো এজেন্ডা অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো। যদি প্রশাসন অনুরোধ উপেক্ষা করে শিক্ষক স্বার্থ বিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তখন এ ব্যাপারে পরবর্তী সাধারণ সভার মাধ্যমে কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে।
এই বিষয়ে জানতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সজীব কুমার ঘোষ বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিদ্ধান্তের বাইরে নিজে থেকে চিঠি ও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। তাই এর প্রতিবাদে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। সিন্ডিকেট নির্বাচন চেয়ে উপাচার্যকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি সাধারণ সভার কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না।’
শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, ‘সমিতির কার্যনির্বাহীর সদস্যদের অনুমতি নিয়েই উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছি। গত ২২ ডিসেম্বর ও ২৩ ডিসেম্বর সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সভা হয়েছে। সভায় সকলের সম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণ সম্পাদকসহ চারজন ২৩ তারিখের সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। আর সাধারণ সম্পাদক যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে তা শতভাগ অবৈধ।’
সারাবাংলা/সিসি/এনএস