২২ বীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ: হাইকোর্ট
৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৬
ঢাকা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গেজেটভুক্ত ২২ নৌ-কমান্ডোর নাম বীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী এবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
ওই ২২ জন নৌ-কমান্ডো মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের দায়ের করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু।
পরে আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু জানান, ২০০৩ সালে সরকারের গঠিত সাত সদস্যের একটি যাচাই-বাছাই কমিটি ওই এলাকার ৪৭২ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রণয়ন করে।
উক্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পরে ২০০৫ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় রিট আবেদনকারী ২২ জন নৌ-কমান্ডোকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হিসেবে গেজেটভুক্ত করা হয়। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি স্বরূপ তারা ভাতা দিয়ে আসছে। কিন্তু পরে ওই নৌ-কমান্ডো মুক্তিযোদ্ধাদের আবারও যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় আনা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২২ জন রিট আবেদনকারীসহ ২৪ জন নৌ-কমান্ডো বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল (৩৫তম সভায়) জামুকা একটি সিদ্ধান্ত নেয়।
পরে ২২ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার জামুকার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে।
রিট আবেদনকারীরা হলেন- গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রামপুরা গ্রামের মো. আব্দুল হান্নান সরকার, রামচন্দ্রপুরের মো. বাহার উদ্দিন, রামপুরার মো. এন্তাজ আলী, মো. গোলাম মোস্তফা, মো. সাইদুর রহমান, মো. আব্দুল আজিজ শেখ, মো. ফয়জার রহমান, মো. শরীফ উদ্দিনের স্ত্রী সকিনা বেগম, জিন্নাত আলীর স্ত্রী মজিদা বেগম, আফতাব উদ্দিনের ছেলে মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী তাসলিমা বেগম, করিম বক্সের চেলে মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী আয়েশা বেগম, আমিনুল ইসলাম, বিনয় কুমার সরকার, আব্দুল গাফফারের স্ত্রী হামিদা বেগম, আশরাফুল আজাদ, গোলাম হোসেনের স্ত্রী সুফিয়া বেগম, শামসুল হক, মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো.জুয়েল সরকার, বজলুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন প্রধানের স্ত্রী নুর বেগম ও মো. হারুন অর রশিদ।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ৯ মে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। পাশাপাশি জামুকার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন।
রুলে ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের আবেদনকারীসহ ২৪ নৌ-কমান্ডোকে বীর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৩৫তম সভার সংশ্লিষ্ট ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট এই রায়ে বলেছেন- গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সাব-কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে তাদের গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ার জামুকার নেই। এটি সরকার ও মন্ত্রণালয়ের বিষয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ