যেখানেই থাকি জনসেবা করে যাব: প্রধানমন্ত্রী
৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:৪৮
ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে আওয়ামী লীগ দেশ গড়ার জাতীয় দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে। যদি বিজয়ী না করে, তাহলে আমরা জনগণের কাতারে চলে যাব। যেখানেই থাকি, আমরা জনগণের সেবা করে যাব।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠনের চার বছরপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
শুরুতে প্রধানমন্ত্রী দেশ ও দেশের বাইরে অবস্থানরত সকলের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি খ্রিষ্টীয় নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতার প্রতি অবদান স্মরণ করেন এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০-লাখ শহিদ এবং ২-লাখ নির্যাতিত মা বোনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান তিনি। ১৫ই আগস্ট নরপিশাচ ঘাতকদের হাতে নিহতদের সকল শহিদদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান তিনি। পাশাপাশি ২০০৪ সালের ২১-এ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত ২১ হাজার নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের অবদানের কথাও স্মরণ করেন তিনি।
একইসঙ্গে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাস এবং পেট্রোল বোমা হামলায় যারা নিহত হয়েছিলেন তাদের আত্মীয় স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের প্রতিও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
সরকার গঠনের পর যেসব রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ মারা গেছেন তাদেরও আত্মার মাগফিরাত এবং শান্তি কামনা করেন টানা মেয়াদে সরকার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরের শেষে অথবা সামনের বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এখন থেকেই স্বাধীনতা বিরোধী, ক্ষমতালোভী, জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনকারী আর পরগাছা গোষ্ঠির সরব তৎপরতা শুরু হয়েছে। এদের লক্ষ্য ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি করে পেছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা। গণতন্ত্রের এই অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা। এরা লুণ্ঠন করা অর্থ দিয়ে দেশে-বিদেশে ভাড়াটে বুদ্ধিজীবী এবং বিবৃতিজীবী নিয়োগ করেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরা মিথ্যে এবং ভুয়া তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’
দেশবাসীকে এদের মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলসমূহ এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এমন কোনো উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেন না এবং ইন্ধন জোগাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বাংলাদেশে এই প্রথম একটি আইন পাস করা হয়েছে। সেই আইনের আওতায় সার্চ কমিটি করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। সরকার সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে।’
সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের দল, জনগণের শান্তিতে বিশ্বাসী, জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। জনগণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে আওয়ামী লীগ দেশ গড়ার জাতীয় দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে। যদি বিজয়ী না করে, তাহলে আমরা জনগণের কাতারে চলে যাব। তবে, যেখানেই থাকি, আমরা জনগণের সেবা করে যাব।’
কিন্তু ষড়যন্ত্র করে কেউ যেন জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে, কেউ যাতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে মানুষের জানমালের এবং জীবিকার ক্ষতিসাধন করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান করেন তিনি।
সারাবাংলা/এনআর/একে