মধ্যনগরে ম্যুরাল থেকে এমপি ও তার ভাইয়ের ছবি অপসারণের নির্দেশ
৮ জানুয়ারি ২০২৩ ২৩:১৫
ঢাকা: সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় সরকারিভাবে নির্মিত ম্যুরালের মূল নকশা পরিবর্তন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির নিচে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং তার ভাই ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকনের ছবি স্থাপনের ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে ম্যুরালে থাকা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের ছবি অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
রোববার (৮ জানুয়ারি) এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ এর ম্যুরাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এডিপির অর্থায়নে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এই ম্যুরাল নির্মাণ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, গত ২৩ জুন মেসার্স রানা ট্রেডার্সকে ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭২৪ টাকা চুক্তিমূল্যে ম্যুরালটি বানাতে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ৩০ দিনের মধ্যে মধ্যনগর ব্রিজসংলগ্ন স্থানে ম্যুরাল নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
ম্যুরালের ডিজাইনে এক পাশে বঙ্গবন্ধু ও আরেক পাশে শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি থাকার কথা। তবে সেখানে কোনো অনুমতি ছাড়াই স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তার ভাই ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকনের ছবি যুক্ত করা হয়েছে।
এই ঘটনায় মধ্যনগরের বাসিন্দা রাসেল আহম্মেদের স্ত্রী আওয়ামী লীগ নেত্রী সাজেদা আহম্মেদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবর এ বিষয়ে স্মারকলিপি দেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সারা দেশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রতিটি উপজেলা চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপিত হয়েছে। নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলায় সেই ম্যুরাল নেই। এই ম্যুরাল না করে ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এডিবির অর্থায়নে ১০ লাখ টাকায় মধ্যনগর উপজেলা পরিষদের নির্ধারিত সরকারি জমিতে ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন একটি ম্যুরাল নির্মাণের কাজ বাস্তবায়ন করছেন।
‘ত্রয়ী’ নামের ওই ম্যুরাল স্থাপনায় প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি রয়েছে। নিচে একই স্থাপনায় সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তার ভাই ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকনের ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে।
পরবর্তীতে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগ নেত্রী সাজেদা আহম্মেদ হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
আজ হাইকোর্ট ওই রিটের শুনানি নিয়ে সংসদ সদস্য ও তার ভাইয়ের ছবি ম্যুরাল থেকে অপসারণের নির্দেশ দেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে