নড়াইলে ষাঁড়ের লড়াই
১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:১২
নড়াইল: নড়াইলে অনুষ্ঠিত হলো গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই প্রতিযোগিতা। বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ১৪ দিনব্যাপী এসএম সুলতান মেলার ৮ম দিনে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ মাঠে এ আয়োজন করা হয়।
আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী মনোমুগ্ধকর ষাড়ের লড়াই দেখে খুশি দূর-দূরান্ত থেকে আগত দর্শকেরা। মেলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা।এ গ্রামীণ খেলাধুলার অন্যতম আকর্ষণ ষাড়ের লড়াই। সকাল থেকেই ষাঁড়ের মালিকেরা ষাড় নিয়ে মাঠে আসতে থাকেন। দুপুর ১২টা থেকে লটারির মাধ্যমে জোড়ায় জোড়ায় শুরু হয় ষাঁড়ের লড়াই। লড়াই দেখতে শিশু-বৃদ্ধ নানা বয়সী হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। নড়াইলসহ আশেপাশের জেলা থেকে হাজারো মানুষের আগমনে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয় মেলা প্রাঙ্গণ।
মাগুরা জেলার ষাট বছর বয়সী মো. আরছ আলী বলেন, ‘ছোট বেলায় অনেক বেশি এ্যাড়ে নাড়াই (ষাঁড় লড়াই) হতো। এখন আর দেখা যায় না। শীতের মধ্যে কষ্ট হলেও নাড়াই দেখতে আসছি। প্রতি বছর সুলতান মেলায় ষাঁড়ের লড়াই এর আয়োজন করা হয়। করোনার কারণে বিগত দুই বছর মেলা হয়নি।’
দীর্ঘদিন পর সুলতান মেলায় ষাঁড়ের লড়াই উপভোগ করে খুশি দর্শকেরা। নড়াইল, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ১০০টি ষাড় এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
যশোরের অভয়নগরের ষাড়ের মালিক বিল্লাল হোসেন জানালেন, গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাড়ের লড়াই ধরে রাখার পাশাপাশি মানুষের বিনোদন দেওয়ার জন্য তারা ষাঁড় নিয়ে এসেছেন। এ ছাড়া ষাঁড় বিজয়ী হলে অনেক দামে বিক্রি হয়ে যায়।
নড়াইলের জেলা প্রশাসক ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, আধুনিক সভ্যতার আড়ালে হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এ আয়োজন।
১৪ দিনব্যাপী সুলতান মেলায় বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে রয়েছে চিত্রশিল্পী এসএম, সুলতানের জীবন দর্শন, শিল্পীসত্তা ও কর্মময় জীবনের ওপর সেমিনার ও আলোচনা সভা, দেশ বিদেশিও বিশিষ্ট শিল্পীদের আঁকা ছবির প্রদর্শনী, শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, গ্রামীণ খেলাধুলা (কাবাডি, লাঠিখেলা, ভলিবল, কুস্তি,ভলিবল, আর্চারী, ঘোড়ার গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা), সুলতান পদক প্রদান, প্রতিদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ।
এ ছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যায় সুলতান মঞ্চে স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করছেন।
সারাবাংলা/একে