ঢাকা: দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সরকারের উন্নয়ন চোখে দেখে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। চোখের ছানি দূর করতে পারলে তারা সরকারের সব উন্নয়ন কাজ ভালো করে দেখতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে দেশের ৪ বিভাগের ১৩ জেলায় ৪৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত ৪৫টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের উদ্বোধন উপলক্ষে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আপনি অনেক উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু আমাদের বিরোধীরা সে উন্নয়নগুলো চোখে দেখে না। কমিউনিটি ভিশন সেন্টারে বা চক্ষু ইনস্টিটিউটে এসে পরীক্ষা করিয়ে ছানি দূর করতে পারলে তারা সব উন্নয়ন কাজ ভালো করে দেখতে পারবেন বলে মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশের তুলনায় আমাদের অবস্থা ভালো। পঞ্চাশোর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্ধত্বের হার ভারতে পৌনে ২ শতাংশ ও নেপালে আড়াই শতাংশ। সেখানে আমাদের দেশে দেড় শতাংশ। ত্রিশোর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে পাকিস্তানে অন্ধত্বের হার পৌনে ৩ শতাংশ, আমাদের দেশে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।’
এ সময় চোখের চিকিৎসায় সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষের চক্ষু চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ভিশন সেন্টার কোনো বিকল্প নেই। এ কমিউনিটি ভিশন সেন্টার প্রতিষ্ঠায় ডিজিটাল প্রযুক্তি সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ দেশের ৪৫ উপজেলায় কমিউনিটি ভিশন সেন্টার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে ৭টি বিভাগের ৩৯টি জেলার ১৩৫টি উপজেলায় সমন্বিত চক্ষু চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আর নতুন এ কমিউনিটি ভিশন সেন্টার স্থাপনের ফলে দেশের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ বা ৫ কোটি মানুষ উন্নত চক্ষু সেবার আওতায় আসবে।’
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের স্বাস্থ্যসেবা বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মানের দিকে আরও বেশি যত্নবান হয়েছি। আমরা ৪টি কমিটি তৈরি করেছি এবং এর মাধ্যমে সারাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তদারকি করা হচ্ছে। আমরা প্রতিটি হাসপাতালে জনগণের উপস্থিতি, সব যন্ত্রপাতি সচল রাখাসহ স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নের বিষয়গুলো ভালোভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশিক্ষিত জনবলের কিছুটা অভাব রয়েছে। তা পূরণেও জনবলের নতুন অবকাঠামো গঠনের জন্য জনপ্রশাসনে রয়েছে। চক্ষুরোগসহ অসংক্রামক রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশে। সেজন্য উন্নত চিকিৎসা ও হাসপাতাল নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।’
এদিন গণভবন থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো. তোফাজ্জল হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।