বাংলা একাডেমির ওপর ‘আমলাতন্ত্রের হস্তক্ষেপে’ লেখকদের উদ্বেগ
২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ২৩:৩০
ঢাকা: বাংলা একাডেমির ওপর ‘আমলাতন্ত্রের হস্তক্ষেপের’ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ২৪ লেখক-শিল্পী। উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি সংস্কৃতি সচিবের অপসারণ দাবি করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শিল্পী-লেখকরা এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
একুশে বইমেলা ২০২৩-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রথম দফায় যে আমন্ত্রণপত্র ছাপানো হয়েছিল, সেখানে বরাবরের মতো শুধু বাংলা একাডেমির লোগো ছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের চাপে দ্বিতীয় দফায় আমন্ত্রণপত্র ছাপাতে হয়েছে বাংলা একাডেমিকে, সেখানে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছে সরকারি মনোগ্রাম।
এ ঘটনায়কে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অধিকার খর্ব হলো কি না— সে প্রশ্ন তুলেছেন কবি, সাহিত্যিক, লেখকরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগ জানিয়ে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠান তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৩ সালে জাতীয় সংসদে পাস করা বাংলা একাডেমি আইনের ৩-এর ২ ধারা অনুযায়ী বাংলা একাডেমি একটি সংবিধিবদ্ধ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান। এটি পরিচালনা করবে কার্যনির্বাহী পরিষদ। এ পরিষদে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন করে সদস্য থাকবেন। এ ছাড়া থাকবেন একাডেমির মহাপরিচালকসহ শিক্ষা, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিজগতের অন্য সদস্যরা। কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে তারাই নেবেন।
কিন্তু এ বছর আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে বাংলা একাডেমির স্বকীয়তা নষ্টের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা সংবাদমাধ্যম সূত্রে জেনেছি, সম্প্রতি সংস্কৃতিসচিব মো. আবুল মনসুর বাংলা একাডেমিতে গিয়ে একাডেমির কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দিয়েছেন, বইমেলাকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েছেন। একাডেমির কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘কিসের স্বায়ত্তশাসন! আপনারা সবাই মন্ত্রণালয়ের অধীন। আপনারা যদি সের হন, মন্ত্রণালয় সোয়া সের।’
বিবৃতিতে বলা হয়, সংস্কৃতি সচিবের অসৌজন্যমূলক আচরণে আমরা স্তম্ভিত, মর্মাহত। সচিব কার্যত সংসদে পাসকৃত আইন লঙ্ঘন করেছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট সচিবের অপসারণ চাই।
লেখক-শিল্পীরা বিবৃতিতে বলেন, শিল্প-সাহিত্যে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ চলবে না। আমরা চাই না ভবিষ্যতে বাংলা একাডেমির অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ হোক। আমরা চাই ইতিহাস-ঐতিহ্যবাহী, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাংলা একাডেমির মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকুক।
বিবৃতি দাতারা হলেন মামুনুর রশীদ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, শামীম আজাদ, হাফিজ রশিদ খান, ফেরদৌস নাহার, খালেদ হোসাইন, শামীম রেজা, শোয়াইব জিবরান, রাজীব নূর, হেনরী স্বপন, শামীম শাহান, শাহেদ কায়েস, কাজল কানন, আহমেদ শিপলু, সাকিরা পারভীন, অতনু তিয়াস, অরবিন্দ চক্রবর্তী, হামিম কামাল, শরাফত হোসেন, মীর রবি, লোপা মমতাজ, শারমিনুর নাহার, হাবিবুল্লাহ ফাহাদ ও হাসান হামিদ।
সারাবাংলা/এজেড/একে