‘আওয়ামী লীগ পালায় না, জনগণকে নিয়ে কাজ করে’
২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:২৬
ঢাকা: বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না, জনগণকে নিয়ে কাজ করে। এই সংগঠন জাতির পিতা শেখ মুজিবের হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন যখনই ক্ষমতায় এসেছে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পবির্তন হয়েছে।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন।
জনসভায় ভাষণের আগে সরকারের ১৪ বছরে উন্নয়নে বদলে যাওয়া রাজশাহীবাসীর জন্য ২৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। ফলক উন্মোচন শেষে দোয়া মোনাজাতে অংশ নেন শেখ হাসিনা। উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বোধনকৃত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। প্রায় ১১ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৩২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৩৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান।
পরে সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বিরোধী দল অনেক কথাই বলে। তারা বলে আওয়ামী লীগ নাকি পালাবার পথ পাবে না। বিএনপি-জামায়াত জোট যারা হয়েছে তাদের জিজ্ঞেস করি, পালায় কে? আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না। পিছু হটে না। এমনকি আমাকে জিয়াউর রহমান বাধা দিয়েছিল, দেশে আসতে দেবে না। আমি বাধা অতিক্রম করে দেশে আসছিলাম। আবার ২০০৭ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে। তখনও আমি বিদেশে গিয়েছিলাম। আমার ছেলের বউ অসুস্থ হয়েছিল। তার বাচ্চা হয়েছিল তাকে দেখতে। আমাকে দেশে ফিরতে দেবে না। আমি জোর করে দেশে ফিরে এসেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মার্ডার কেস দেওয়া হয়েছিল। আমি বলেছিলাম, আমি যাব। কেস মোকাবিলা করব। আমি দেশে ফিরে এসেছি শুধু বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ যারা বলে পালানোর সুযোগ পাবে না আওয়ামী লীগ। আমি স্পষ্ট বলতে চাই, আওয়ামী লীগ পালায় না। পালায় তাদের নেতারাই। কারণ, বিএনপির নেতা কে? তারা নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কাকে নিয়ে? দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে। যে নাকি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়েছিল, আর কোনোদিন রাজনীতি করবে না। এই বলে সে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। সেই কথা কি বিএনপির নেতাদের মনে নাই?’
খালেদা জিয়া আরেক ছেলে কোকোর মানি লন্ডারিং করা টাকা বিদেশ থেকে ফেরত আনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না। আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে কাজ করে। এই সংগঠন জাতির পিতা শেখ মুজিবের হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন যখনি ক্ষমতায় এসেছে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পবির্তন হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, প্রায় পাঁচ বছর পর আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে উন্নয়নের বার্তা নিয়ে পদ্মা পাড়ে ভোট প্রার্থনায় আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তার আগে দুপুরে মাদ্রাসা মাঠের জনসভার শুরুতে পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল, ত্রিপিটক থেকে পাঠ করা হয়। এরপর দলের প্রয়াত নেতাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে স্থানীয় নেতাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ভাষণ পর্ব শুরু হয়।
পরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর শেষে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জনসভা মঞ্চে আসন গ্রহণের আগে হাত নেড়ে উপস্থিত জনতাকে অভিবাদন জানান প্রধানমন্ত্রী। জনসভাকে সফল করার লক্ষ্যে বিশেষ ট্রেন, বাস, মিনিবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে রাজশাহী বিভাগের আওতাধীন জেলাগুলো থেকে নেতাকর্মীরা জনসভায় এসে যোগ দেন।
রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এই জনসভার আয়োজন করে।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাতসহ স্থানীয় নেতারা। জনসভা পরিচালনা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম