বস্ত্রের চাহিদার ২৮ ভাগ পূরণ করছে তাঁতশিল্প: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী
২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:০৯
ঢাকা: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক জানিয়েছেন, সারাদেশে তাঁত ফ্যাক্টরির সংখ্যা দুইশ ৭৭টি এবং তাঁত ইউনিটের সংখ্যা এক লাখ ১৬ হাজার ১৭৭ টি। ২০১৮ সালের তাঁতশুমারি অনুযায়ী তাঁতশিল্প হতে দেশের মোট বস্ত্রের চাহিদার শতকরা ২৮ ভাগ পূরণ করা হয়ে থাকে (পাওয়ার লুম ব্যতীত)।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে জাতীয় সংসদে এ তথ্য জানান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিনের সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্ন উত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের অধীন বন্ধ ঘোষিত মিলগুলোর পাওনা ও অন্যান্য দায়-দেনা পরিশোধে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮৯১ কোটি ১৫ লাখ টাকা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া জয়। গত বছর ৩১ ডিসম্বর পর্যন্ত মোট আটশ ৩০ কোটি ৮১ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। যার শতকরা হার ৯৩ দশমিক ২৩ শতাংশ।
জামালপুর-৫ আসনের সরকার দলীয় মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জানান উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবছর ৫ লাখ ৮০ হাজার পাটচাষি এবং ৪৫ হাজার পাটবীজ উৎপাদনকারী চাষিকে বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক ও কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সরকার দলীয় এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও জানান, বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকলগুলোর ১০৫৬ জন শ্রমিকের পূর্ণ পাওনা পরিশোধে দেরি হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘তুলা উৎপাদনে ৬ থেকে ৭ মাস লাগে। এই সময়ের মধ্যে চাষিরা একাধিক ফসল উৎপাদন করতে পারে। এ কারণে চাষিরা তুলা চাষে আগ্রহী হয় না। আর তুলা চাষে জমির স্বল্পতা রয়েছে। দেশে উৎপাদিত তৈরি পোশাকের ৭৪ শতাংশই তুলা দিয়ে তৈরি হয়। বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের ৭৮ শতাংশ হাতে তৈরি সুতা দিয়ে। হাতে তৈরি সুতাভিত্তিক পোশাক উৎপাদনে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিকল্পনা তুলা আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করতে সহায়ক হবে।’
নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জানান, ২০১৮ সালের তাঁত শুমারি দেশে তাঁত সংখ্যা ২ লাখ ৯০ হাজার ২৮২ টি (পাওয়ারলুম ব্যতীত)। বাগেরহাট, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও ভোলা ব্যতীত দেশের সব জেলায় কম-বেশি তাঁত রয়েছে।
নিট সুতার চাহিদা ১৬ লাখ মেট্রিক টন
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নের জবাবে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে নিট সুতার চাহিদা ১৬ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে ১২ লাখ টন সুতা দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি ৪ লাখ মেট্রিক টন সুতা আমদানি করা হয়।’
ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছর হতে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৭ দশমিক ২৭ লাখ মেট্রিক টন পাট উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে ৪ দশমিক ১৫ লাখ মেট্রিক টন পাট রফতানি করা হয়েছে।
তিনি জানান ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১১২ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১২৯ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৩৮ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলারের কাঁচাপাট রফতানি করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির জন্য এক হাজার ২৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে