Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৫০ তালগাছে কীটনাশক দেওয়া সেই আ.লীগ নেতাকে তলব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:১৮

ঢাকা: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় সরকারি রাস্তার পাশে লাগানো অর্ধশত তালগাছ মেরে ফেলার জন্য কীটনাশক প্রয়োগকারী স্থানীয় শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার আলমকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হয়ে কীটনাশক প্রয়োগের বিষয়ে তাকে ব্যাখ্যা জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সম্পাদকীয় নজরে নিয়ে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

আদেশে আদালত বলেছেন, খবরের উল্লেখিত ঘটনা আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। সবুজ বনায়ন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রীর বৃক্ষরোপণের উদ্দেশ্যে অঙ্গীকারকে বিবেচনায় নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল দিচ্ছি।

৫০টি তালগাছ মেরে ফেলতে কীটনাশক প্রয়োগের জন্য কেন শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাসহ পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে বিবাদীদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

আদেশে আদালত বলেছেন, বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কৃষি কর্মকর্তা যৌথভাবে সরেজমিন তদন্ত করবেন। তারা উল্লেখিত গাছগুলোর ছবিসহ প্রতিবেদন আগামী সাত দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করবেন।

প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে আদালতে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আদেশের কপি বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বরাবর পাঠাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গত ৩১ জানুয়ারি দেশের এক জাতীয় দৈনিকে ‘৫০ তালগাছে কীটনাশক; দোষীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ কেন নয়’ শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় ছাপা হয়।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, বজ্রপাত নিরোধে সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশ সফর করেছেন, কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনাকাটা ও বসানোও হয়েছে। লাখ লাখ তালবীজ সংগ্রহ ও রোপণের কথাও বলা হয়েছে।

কিন্তু দিন শেষে জনগণের অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই হয়নি। সেখানে সাধারণ মানুষেরাই স্বেচ্ছায় বছরের পর বছর ধরে তালবীজ রোপণ করে বরং বড় ভূমিকা রাখছেন। এখন সেসব তালগাছের ওপরও আসছে আঘাত। সম্প্রতি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাইগাছা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় এক দশক আগে স্থানীয় এক বৃদ্ধসহ কয়েকজন ব্যক্তি সড়কের উভয় পাশে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তালবীজ লাগিয়েছিলেন। সেসব তালগাছ বড় হয়ে এখন ছায়া দিচ্ছে। একটি তালবীজ গাছ হয়ে উঠতেই সময় লাগে এক দশক বা যুগের বেশি।

ফলে বোঝা যায়, কী নিষ্ঠা ও ধৈর্য্য নিয়ে পরিচর্যা করে তালগাছগুলো বড় করে তুলেছেন বাইগাছার সেসব উদ্যোগী মানুষ। আর আমরা অবাক হলাম, সেই গাছগুলো মারতে বাকল তুলে সেখানে কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন শাহরিয়ার আলম নামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। প্রকৃতি ও গাছের প্রতি কী রকম নির্দয় হলে এমন কাজ করা যায়, সেটিই প্রকাশ পায় এ ঘটনায়।

শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাহরিয়ার আলম তালগাছ মেরে ফেলার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য প্রতিবেদককে অনুরোধও করেন। তালগাছের ছায়ার কারণে শাহরিয়ারের লাগানো আমগাছ ঠিকমতো বেড়ে উঠছিল না। ফলে এমন কাণ্ড করেছেন তিনি।

এমন অমানবিক কাজের জন্য শাহরিয়ার আলমকে আইনের আওতায় আনা হোক। এ ছাড়া বন বিভাগের স্থানীয় দায়িত্বশীলদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, মরতে বসা তালগাছগুলোকে সারিয়ে তোলার দ্রুত পদক্ষেপ নিন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

আওয়ামী লীগ নেতা তাল গাছ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর