‘করদাতাদের কোনোভাবেই হয়রানি করা যাবে না’
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৪৪
ঢাকা: করদাতাদের কোনোক্রমেই হয়রানি করা যাবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজস্ব সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আয়কর ব্যবস্থা ক্রমবিকাশ এবং বাংলাদেশের অগ্রযতায় আয় করের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘কর পেতে হলে সেবা বাড়াতে হবে। করের আওতা কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় তা দেখতে হবে। তবে করদাতাদের কোনোক্রমেই হয়রানি করা যাবে না। ব্যবসায়ীরা টাকা উপার্জন করেন। ট্যাক্স কালেক্টররা তাদের থেকে ট্যাক্স আদায় করেন। কিন্তু তাদের মধ্যে ভয় থেকে যায়। কাজেই এনবিআরকে করদাতাদের ভীতি দূর করতে হবে। কারণ অনেক ট্যাক্স পেয়ার বলেছে আমরা সরকারকে ট্যাক্স দিই। ট্যাক্স গ্রহণকারীদেরও কিছু দিই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এনবিআরের কার্যক্রম তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃত করতে হবে। আগে ৯৮ শতাংশ মানুষের গায়ে কাপড় থাকত না। একটা গরু জবাই করলে সহজে মাংস বিক্রি হতো না। এখন পাঁচ সাতটা বিক্রি হয় গ্রামের বাজারে। অর্থাৎ গ্রামেও মানুষের আয় বেড়েছে। কর্মকর্তাদের পলিসি গঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। কোথাও দরকার হলে পলিসি সংশোধন করতে হবে।’
প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তৃতায় এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি এম এ মোমেন বলেন, ‘ট্যাক্সের আওতা বাড়াতে হবে। শুধু ট্যাক্স পেয়ার চিহ্যিত করলে হবে না, তাদের কাছে কর আদায় করতে হবে। ট্যাক্স আইন ব্যবসাবান্ধব করতে হবে। তা না হলে কার উপকারে লাগবে। ট্যাক্স ম্যানুয়েল করতে হবে। তা না হলে একই ব্যক্তিকে বারবার ট্যাক্স দিতে হবে।’
মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাত কবির বলেন, ‘ট্যাক্স-জিডিপির অনুপাত কম। কারণ আয়কর প্রদানকারির সংখ্যা এখনও কম। করের হার যৌক্তিক পর্যায়ে আসতে হবে। করগ্রহীতাদের সরাসরি না গিয়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে কর সংগ্রহ করতে হবে। যরা পলিসি করবে তাদের মাধ্যমে কর আদায় করা যাবে না। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে কর আহরণ বাড়াতে হবে।’
মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী বলেছেন, ‘করদাতা ও কর গ্রহণকারীদের মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি (ট্রাস্ট ডেফিসিয়েট) রয়েছে। এটি দূর করতে হবে। যখর যা আসবে তাই করা যাবে না। আর কর বিভাগকে পেশাদারিত্ব হতে হবে। নীতি বিশ্লেষণ করতে হবে। ট্যাক্স পলিসি ও টাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে আলাদা করতে হবে।’
বিজিএমইএর পরিচালক আসিফ আশরাফ বলেন, ‘যারা কর আদায় করবে তারা যদি নীতি নির্ধারণী হয় তবে সমস্যা। আমরা ৮৪ শতাংশ বেসরকারি খাত থেকে রাজস্ব দিয়ে থাকি। তারপরও মাঠ পর্যায়ে কর গ্রহণকারীদের কারণে ভীতিতে থাকি। ২০২৬ সালে দেশ এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েশন হবে। তাই ট্যাক্স পলিসি ও ট্যাক্স কালেক্টর-এই দুই প্রতিষ্ঠানকে আলাদা করতে হবে।’
সারাবাংলা/এসজে/একে