ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হাইকোর্টে বাংলায় রায়
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:৫৭
ঢাকা: যশোরের সদর উপজেলায় ২০১২ সালে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্বামী আবদুল্লাহ ওরফে তিতুমীরকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলা ভাষায় এই এ রায় দেন হাইকোর্ট।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স খারিজ ও আসামির আপিল মঞ্জুর করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সারোয়ার আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন অর রশিদ।
পরে আইনজীবী সারোয়ার আহমেদ জানান-ভিকটিম আত্মহত্যা করেছে। কারণ তাকে দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয়েছে। সাক্ষীদের সাক্ষ্যও পরপস্পর বিরোধী। এ কারণে মামলাটি সন্দেহতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি। এ সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদালত আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
তবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন অর রশিদ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, যশোর সদর উপজেলার সুলতানপুর বাবুপাড়া এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে আসামি আবদুল্লাহ ওরফে তিতুমীর ওরফে তীতু ২০১১ সালে একই উপজেলার মোবারককাটি গ্রামের কবির হোসেনের মেয়ে সালমা খাতুনকে বিয়ে করে। বিয়ের পর পালসার মোটরসাইকেল যৌতুক দাবি করে আবদুল্লাহ।
যৌতুকের দাবি মেটাতে ব্যর্থ হওয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতন শুরু করে আবদুল্লাহ। এরপর ২০১২ সালের ৯ জুলাই ভোররাতে মারপিটের পর গায়ে কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে সালমাকে হত্যা করার অভিযোগ এনে সালমার বাবা যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
পরে ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর আবদুল্লাহ ও তার বাবাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ পুলিশ।
পরে বাবাকে বাদ দিয়ে আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।
এরপর সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে ২০১৭ সালের ১৭ মে আবদুল্লাহকে মৃত্যুদণ্ড দেন যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) অমিত কুমার দে।
পরে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামি আবদুল্লাহ খালাস চেয়ে আপিল করেন।
আজ আদালত ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে করে। একই সঙ্গে আসামির আপিল গ্রহণ করে তাকে খালাস দেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে