Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘অনির্বাচিত সরকারের দুঃস্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসুন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:৩৮

ফাইল ছবি: সংসদ অধিবেশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: অনির্বাচিত সরকারের দুঃস্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অনির্বাচিত সরকার হচ্ছে আতংকের নাম। যারা অনির্বাচিত সরকারের কথা বলছে তারা দেশ ও জনগণকে আতংকের মধ্যে ফিরিয়ে নিতে চায়। অনির্বাচিত সরকার জনগণ মেনে নেবে না। সরকারে যেতে চাইলে নির্বাচনে আসুন।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এ সব কথা বলেন। এদিন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা অনির্বাচিত সরকার আনতে চায়, তারা কি দেশের সংবিধানে বিশ্বাস করে? গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে? স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে? কিছু কিছু লোক বলে যাচ্ছেন, দুই/তিন বছর অনির্বাচিত সরকার থাকলে ক্ষতিটা কী? এতে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে? এটি কোন ধরনের কথা। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার আসবে, যার জন্য আমাদের সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, জেল-জুলুম অত্যাচার পর্যন্ত সহ্য করা।’

তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। এখানে নাকি অনির্বাচিত সরকার আনতে হবে। অনির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে যাদের ক্ষমতায় আসার ইচ্ছা, তাদের বলব, রাজনীতি করেন, জনগণের কাছে যান। জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসেন। জনগণ যাদের ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন যে অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় সেটা তো আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি। রংপুরের মেয়র নির্বাচনে আপনারা দেখেছেন। সেখানে আমরা হেরেছি। এখানে উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসা ছয় জন সংসদ সদস্য বক্তব্য রেখেছেন। এই উপনির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। বাংলাদেশের একজন মানুষও কি এই নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলতে পেরেছে? তুলতে পারেনি। তবে কিছু লোক আছে, তাদেরসব সময় উল্টো কথা বলতেই হবে।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই নির্বাচন যে স্বচ্ছ হয়েছে, অবাধ নিরপেক্ষ হয়েছে, এটা কি প্রমাণ করে না যে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে, নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন, নিরপেক্ষভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবার সক্ষমতা রাখে? সেখানে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করেনি, করেও না, করবেও না। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিতের জন্যই তো আমাদের আন্দোলন। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি। সেই সংগ্রামের সাফল্যে আজ ভাতের অধিকার যেমন আমরা নিশ্চিত করেছি, ভোটের অধিকারও নিশ্চিত করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘টেলিফোনে আড়িপাতা নিয়ে কেউ কেউ কথা বলছেন। কিন্তু আড়িপাতা না গেলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করা হবে কিভাবে? আড়িপাতার মাধ্যমেই জানা সম্ভব, কারা ষড়যন্ত্র করছে, সন্ত্রাস সৃষ্টি ও জঙ্গি তৎপরতার পরিকল্পনা করছে। তাই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু করা হবে।’ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটা আইনসিদ্ধ বলেও দাবি করেন তিনি।

সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই উন্নয়ন দৃশ্যমান উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসে আমরা মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি। দেশের কোনো মানুষ গৃহহীন ও অভুক্ত থাকবে না। সে লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করার কাজ চলছে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছাবো।’ যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আগামী রমজানে দেশে কোনো খাদ্য সংকট দেখা দেবে না বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেশে পর্যন্ত খাদ্য মজুত রয়েছে। রমজান মাসে খাদ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরপরও গুজব ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে কেউ কেউ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’ এলসি খোলায় অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ঘোষিত অর্থনৈতিক নীতিমালা গ্রহণ ও যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলেই দেশের দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। ফলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের মাঝে স্বস্তি ও শান্তি ফিরে এসেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে।’

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, ‘সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ এবং দেশের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ডিজিটাল সুবিধা ব্যবহার করে করোনা মহামারি মোকাবিলা করেছে। কোভিড মহামারি মোকাবিলায় উপমহাদেশে বাংলাদেশ প্রথম ও সমগ্র বিশ্বে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে।’ বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দেওয়ায় ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর