Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গাজী পাম্প অ্যান্ড মটরসের সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড সেলিব্রেশন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:০৮

ঢাকা: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ওয়াটার পাম্প ক্যাটাগরিতে সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড স্বীকৃতি পেয়েছে ‘গাজী পাম্প অ্যান্ড মটরস’। প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু দুই দশকের মাথায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি সারাদেশের মানুষের বিশ্বাস ও আস্থার প্রতীক হিসাবে সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড স্বীকৃতি পায় গাজী পাম্প অ্যান্ড মটরস। দিনটি উদযাপন করতে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিজয়নগরের ‘ফার্স হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে’ এক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা করা হয়েছিল।

প্রতিষ্ঠানের সব পর্যায়ের কর্মীদের নিয়ে আয়োজন করা হয় সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড সেলিব্রেশন গালা ডিনার। পাশাপাশি ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

গাজী পাম্প অ্যান্ড মটরস সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড সেলিব্রেশন গালা ডিনারে অংশ নিয়ে গাজী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মূতর্জা পাপ্পা বলেন, “১৯৯৫ সালে যখন গাজী ট্যাঙ্ক চালু করা হয়, তখন একটা বিজ্ঞাপন ছিল, যেখানে মরহুম গোলাম মোস্তফা বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ভাবতে ভালোই লাগে’। ১৯৯৫ থেকে ২০২৩ সালে এসে আমি বলতে পারি, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে, দেখতে ভালো লাগছে, সঙ্গে গাজীও এগিয়ে গেছে দেখতে অব্যশই ভালো লাগছে’।”

তিনি বলেন, “কোম্পানি চালানো একটি প্রজ্ঞার ব্যাপার। আমরা গাজী ট্যাঙ্কে সাকসেসফুল হয়েছি। আমাদের যত প্রডাক্ট রয়েছে, টায়ার বলেন সবকিছুতেই সফলতা এসেছে। গাজী পাম্প ছিল একটা টেকনিক্যাল প্রডাক্ট। এই ধরনের একটি টেকনিক্যাল প্রডাক্ট চালাতে বিদ্যুৎ লাগে। লো ভোল্টেজ প্রবলেম, টেকনিক্যাল প্রবলেম। এসব মোকাবিলা করেই গাজী পাম্প এগিয়ে গেছে। এর কারণ একটাই আমরা একটা ডাইনামিক প্রডাক্ট তৈরি করেছি। এটা ‘মেইড ইন চায়না বাট মেইড ফর বাংলাদেশ’।”

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা যখন পাম্প নিয়ে আসি তখন দেখি বাংলাদেশের মানচিত্রের বিভিন্ন জায়গায় পানির লেভেল বিভিন্ন ধরনের। চাহিদা নির্ধারণ এবং কাস্টমারের চাহিদা, তাদের আর্থিক ব্যাপারটাও ভিন্ন ভিন্ন। উত্তরবঙ্গে এক ধরনের, পশ্চিমবঙ্গে এক ধরনের, দক্ষিণবঙ্গে আরেক ধরনের- এসব কথা মাথায় রেখে আমরা পাম্প সরবরাহ করেছি। আজ আমরা সুপার ব্যান্ডের যে স্বীকৃতি পেয়েছি, সেটা সত্যিই অনুপ্রেরণার। এইজন্য আমি প্রথমে ধন্যবাদ জানাই আমাদের প্রতিষ্ঠানের সব কর্মচারীদের। যারা দিনরাত পরিশ্রম করে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন, এটা একটা টিমওয়ার্ক। সবার পরিশ্রমের কারণেই আজকের সফলতা এসেছে।’

‘একটা পুরস্কার পাওয়া অব্যশই অনুপ্রেরণার, সুপার ব্র্যান্ড হওয়া অব্যশই গর্বের। আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি কিছুদিন পর আমরা গাজী পাম্প অ্যান্ড মটর সুপারব্র্যান্ডস থাকবো না, আমরা তখন থাকবো বাংলাদেশের একমাত্র ব্র্যান্ড গাজী পাম্প অ্যান্ড মটরস। এই জিনিসটা করার জন্য আমরা যত ধরনের স্যাক্রিফাইস করার দরকার ছিল আমরা করেছি’, বলেন গাজী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের কিছু ব্যবসায়ী আছেন যারা প্রডাক্টের আগে লাভের চিন্তা করেন কিন্তু আমরা তার উল্টো। আমরা প্রডাক্ট বিফোর প্রফিট। কারণ ২০০১/২০০২ সালে আমরা যখন গাজী পাম্প আনি তখন আমরা একমাত্র ব্র্যান্ড ছিলাম। যারা নিজেদের একটা প্রডাক্ট নিজেদের নাম লঞ্চ করালাম। আজ আমরা সুপারব্র্যান্ডস স্বীকৃতি পেয়েছি। এই সফলতার জন্য একজন ব্যক্তির কথা না বললেই নয়, আমরা আগুন দেখি কয়লাটা দেখি না বা গ্যাস দেখি না। আমাদের আগুন বলেন আর কয়লা বলেন কিংবা ফুয়েল ফর সাকসেস হচ্ছেন একজন ব্যক্তি। তিনি হলেন, গোলাম দস্তগীর গাজী। কারণ তিনি কোনো সময় বলেন নাই, লাভ করতে হবে। উনি সবসময় বলেছেন, এমন একটা জিনিস মানুষের ঘরে দিতে হবে, যাতে সে জিনিসটা মানুষ নিয়ে ফেরত দিতে না আসে। এই পরিশ্রম এবং প্রেরণা থেকেই গাজী পাম্পের সুপারব্র্যান্ড হয়ে ওঠার গল্প।’

গাজী গ্রুপের পরিচালক ও সারাবাংলা ডটনেটের প্রকাশক বদরুল আলম খান বলেন, ‘আজকের দিনটি সত্যিই একটি আনন্দের দিন। গাজী পাম্প অ্যান্ড মটরস ২২ বছর অতিক্রম করার পর আজ আমরা সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে তার সেলিব্রেশন করছি। আজ আমাদের বলতেই হবে, কি ভাবে আমরা এটা শুরু করেছি কার মাধ্যমে শুরু করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথমে ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা দিয়ে ৩ কইন্টেনার পাম্প এনে ব্যবসা শুরু করি। প্রথম অবস্থায় পুরো টাকাটাই লস করে। তারপরও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী দমে যাননি। তখন আমি নির্জীব হয়ে গেলাম। গাজী সাহেব আমাকে বললেন, চিন্তা করো না, নিশ্চয় আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবো। আজ ২২ বছর পর বলতে চাই, সেদিন যদি গাজী সাহেব বলতেন পাম্পের ব্যবসা হবে না, তাহলে আজকের এই সুদিন আসতো না।’

‘সারাদেশের যেকোনো গ্রাম-গঞ্জে গিয়ে গাজী সাহেবের নাম বললে, লোকজন বলে উনি কি গাজী ট্যাঙ্কের, গাজী পাম্পের গাজী সাহেব? তার মানে হলো গাজী ট্যাঙ্ক হলো গাজী সাহেবের ফেইস। গাজী সাহের হার্ট ছিল গাজী টায়ার। সম্ভবত সেটা আজও তাই আছে। ট্যাঙ্ক হলো গাজী সাহেবের ফেইস, গাজী টায়ার হচ্ছে গাজী সাহের হার্ট। আজ সবচেয়ে চকচকে যে চিত্রটি গাজী সাহেবের ললাটে এসে গেছে তা হলো, গাজী পাম্প সুপারব্র্যান্ডস। এজন্য আমরা গাজী গ্রুপের কর্মীদের অভিনন্দন জানাই। শিগগিরিই গাজী পাম্প আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হবে। আগামী ১৫ বছরের মধ্যে আমেরিকার দোকানেও গাজী পাম্প পাওয়া যাবে’, বলেন গাজী গ্রুপের পরিচালক।

সেলিব্রেশন অনুষ্ঠানে গাজী ইন্টারন্যাশনালের চিফ অপারেটিং অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন পারভেজ বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল কখন আমরা সুপারব্রান্ডস অ্যাওয়ার্ড অর্জন করবো? আজ আমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপলাভ করেছে। তিনটি মডেল নিয়ে গাজী পাম্প যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে হাজারও মডেলের গাজী পাম্প সরবরাহ করা হচ্ছে। দৈনিক আমাদের সর্বনিম্ন ১ হাজার থেকে ১০ হাজার পাম্প বিক্রি হচ্ছে। গত ২০/২১ বছরে সারাদেশে ১ কোটিরও বেশি গাজী পাম্প বিক্রি করেছি। গাজী পাম্প দুই বছর ফ্রি সার্ভিস দিচ্ছে। এই সার্ভিস দেওয়ার জন্য আমাদের ৩০০ প্রকৌশলী কাজ করছেন।’

গাজী গ্রুপের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার আনন্দ চন্দ্র নাহা বলেন, ‘পাম্প ক্যাটাগরিতে গাজী পাম্প সুপাব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড অর্জন করায় এটা প্রমাণিত হয়েছে, গাজী পাম্প এদেশের জনগণের আস্থা ও বিশ্বস্ততার প্রতীক।’

গাজী গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক এম সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা গাজী গ্রুপে একটা টিম দেখেছি, একটা টিমওয়ার্ক দেখেছি, আমার চোখের সামনে দেখেছি কিভাবে গাজী ইন্টারন্যাশনাল গ্রো করেছে। কিভাবে গাজী পাম্প একটা সুপারব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। আমার কাছে এই টোটাল সাকসেসের দাবিদার হচ্ছে টপ থেকে বটম, গাজীর যত এমপ্লয়ি আছে গাজী ইন্টারন্যাশনালে যারা আছেন, তারা সবাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গত ২২ বছরের একটা জার্নিতে আজকের অবস্থানে এসেছি একটি শক্তিশালী টিমওয়ার্কের কারণে। আমাদের ডিলার এবং ক্লায়েন্টরা এখন বলতে পারবে বাংলাদেশ বেস্ট প্রোডাক্ট এই ক্যাটাগরিতে আমরা এখন বিক্রি করছি। আর ক্লায়েন্টরা বলতে পারবেন, আমরা বাংলাদেশের সেরা প্রোডাক্ট ব্যবহার করছি। আমরা এই ক্যাটাগরিরে কেবল সুপারব্র্যান্ড নয়, একমাত্র ব্র্যান্ড হিসাবে মার্কেটে থাকবো।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সারাবাংলার চিফ নিউজ এডিটর মোস্তাফিজুর রহমান (রহমান মুস্তাফিজ), জিএম মিয়া ফয়সালসহ গাজী গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, গত ১১ ফেব্রুয়ারি উল্লেখ্য গত ১১ ফেব্রুয়ারি সুপারব্র্যান্ডস বাংলাদেশ স্বীকৃতি পায় গাজী পাম্প অ্যান্ড মটরস। ওইদিন রাতে রাজধানীর শেরাটন হোটেলে অনুষ্ঠিত এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২৩-২০২৪ সালের জন্য বাংলাদেশের সুপারব্র্যান্ডগুলোর নাম ঘোষণা করা হয়। যেখানে সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড স্বীকৃতি পায় গাজী পাম্প অ্যান্ড মটরস।

সারাবাংলা/জিএস/এমও

গাজী পাম্প গাজী পাম্প অ্যান্ড মটরস সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড সেলিব্রেশন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর