‘রাগ করে কথা বলিনি, ভাবিনি আর কথা হবে না’
৪ মার্চ ২০২৩ ২১:৩০ | আপডেট: ৫ মার্চ ২০২৩ ১২:৩০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ‘আমাদের কয়েকটা গরু আছে। সকালে সাগরপাড়ে গরুগুলোকে ঘাস খেতে দিয়ে সে (স্বামী) কাজে চলে যায়। দুপুরে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বড় মেয়েকে জানায় যে, একটি গরু পাওয়া যাচ্ছে না। এতে আমি তার ওপর রাগ করে আর কথা বলিনি। ভাবিনি তার সঙ্গে আমার আর কথা হবে না।’— এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিস্ফোরণে নিহত মো. ফরিদের স্ত্রী রাশেদা বেগম।
শনিবার (৪ মার্চ) রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে তিনি স্বামীর মৃত্যুর সংবাদে কান্না করতে করতে এই প্রতিবেদককে এসব কথা বলছিলেন। নিহত মো. ফরিদ উপজেলার ফৌজদারহাট বাংলা বাজার এলাকার আবুল বাশারের ছেলে। তিনি সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে গাড়িতে করে গ্যাস সিলিন্ডার আনা নেওয়ার কাজ করতেন।
রাশেদা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ১২ বছর ধরে আমার স্বামী ওই কোম্পানিতে গাড়িতে করে গ্যাস সিলিন্ডার আনা নেওয়ার কাজ করছিল। প্রতিদিনের মতো গরুগুলোকে সাগরপাড়ে চড়াতে দিয়ে সে কাজে চলে যায়। সকাল ১১ টার দিকে আমার বড় মেয়েকে কল দিয়ে সে জানায় যে, একটি গরু খুঁজে পাচ্ছি না। এতে আমি রাগ করে তার সঙ্গে কথা বলিনি। ভাবিনি তার সঙ্গে আর কথা হবে।’
ঘরের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারানোর পর এখন কীভাবে সংসার চলবে? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার তিনটি মেয়ে। তারা এখনো ছোট। বড় মেয়ে ক্লাস সিক্সে পড়ে। আর মেঝোটা ক্লাস থ্রিতে। ছোট মেয়েকে বাসায় রেখে এসেছি। আমাদের কী হবে? এই ছোট তিন এতিম বাচ্চাকে নিয়ে আমি কোথায় যাব?’
উল্লেখ্য, শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কদমরসুল ইউনিয়নের ছোট কুমিরা এলাকায় অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা পাঁচজন এবং ১৭ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম