Tuesday 24 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পরনের কাপড়ে মিলল লাশের পরিচয়

শ্যামল নন্দী, স্টাফ ফটোকরেসপন্ডেন্ট
৫ মার্চ ২০২৩ ১৩:৫৬ | আপডেট: ৫ মার্চ ২০২৩ ১৮:২৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন কারখানায় নিহত ছয়জনের মধ্যে সর্বশেষ ব্যক্তিরও পরিচয় মিলেছে। সেলিম রিচিল নামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই ব্যক্তি ওই কারখানার একজন কর্মী ছিলেন। বিস্ফোরণে তার মুখমণ্ডল পুরোটাই বিকৃত হয়ে চেনার কোনো উপায় ছিল না। স্ত্রী এসে পরনের পোশাক দেখে শনাক্ত করেন স্বামীকে।

রোববার (০৫ মার্চ) ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আসেন সেলিমের স্ত্রী লিলি মারাথ। পরনের শার্ট ও শরীর দেখে স্বামীকে শনাক্ত করে সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন লিলি।

পরে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে লিলি মারাথ বলেন, ‘চেহারা বোঝা যাচ্ছে না। মাথা ঠিক আছে। শরীরও চিনতে পেরেছি। আর এই শার্ট পরেই তিনি কাজে গিয়েছিলেন। এটাই আমার স্বামী।’

বিজ্ঞাপন

৩৮ বছর বয়সী সেলিম রিচিলের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। শ্বশুরবাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট এলাকায়। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সীতাকুণ্ডে থাকতেন সেলিম।

লিলি মারাথের ভাই মিথুন মারাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সেলিমের কয়েকজন সহকর্মী বেঁচে গেছেন। তারা নাস্তা খেতে বের হয়েছিলেন। সেলিম বলেছিল- তোমরা যাও, আমি হাতের কাজ শেষ করে বের হচ্ছি। তিনি আর বের হতে পারেননি। ততক্ষণে বিস্ফোরণ হয়।’

বিস্ফোরণের খবর জানার পর শনিবার সন্ধ্যায় লিলির বাবা অজয় মারাথ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন। আহতদের মধ্যে খুঁজেও জামাতাকে পাননি। মর্গে গিয়ে লাশ দেখেও শনাক্ত করতে পারেননি, কারণ চেহারা দেখে বোঝার কোনো উপায় ছিল না।

ফটিকছড়ির চা বাগানের শ্রমিক অজয় মারাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গায়ে শার্ট ছিল। সেটা দেখে আমার মেয়ে শনাক্ত করেছে। আমি তো চিনতে পারিনি তখন। মুখটা একেবারে বিকৃত হয়ে গেছে।’

হাসপাতালে স্থাপিত জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদ আলম রানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিহত সর্বশেষ ব্যক্তির পরিচয় উনাদের পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন। আমরা যাচাইবাছাই করে নিশ্চিত হয়েছি যে, এটা তাদের পরিবারের সদস্যেরই লাশ। এখন পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তর করবে।’

নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা ৬ এবং আহত ২০ জন। আহতদের মধ্যে দু’জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।

নিহতরা হলেন- শামসুল আলম (৫০), ফরিদ (৩৬), রতন লকরেট (৪৫), আব্দুল কাদের (৫০), সালাহউদ্দিন (৩৫) এবং সেলিম রিচিল (৩৮)।

আহতরা হলেন- আরাফাত আলম, মো. মনসুর, নারায়ণ ধর, মো. ফোরকান, জাহিদ হাসান, জসিম উদ্দিন, রোজী আক্তার, রিপন মারাথ, মো. ওসমান, মজিবুর রহমান, আব্দুল মোতালেব, নওশাদ সেলিম চৌধুরী, ফেন্সি, সোলাইমান, শাহরিয়ার, আজাদ, মাসুদ এবং প্রভাস।

আহত রিপন ও নূর হোসেন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে ৭ জন, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন এবং আইসিইউতে ২ জন চিকিৎসাধীন আছেন।

শনিবার (০৪ মার্চ) বিকেলে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের ছোট কুমিরা এলাকায় সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেডে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে পুরো কারখানা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

আরও পড়ুন 

সারাবাংলা/এসএন/আরডি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর