‘অসুস্থ’ রিজভীর দ্রুত মুক্তি চান ফখরুল
৬ মার্চ ২০২৩ ১৬:২০
ঢাকা: কারাবন্দি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অসুস্থ রুহুল কবির রিজভীর দ্রুত মুক্তি চেয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
কেরানীগঞ্জ কারাকারে বন্দি রুহুল কবির রিজভীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ অনেক সিনিয়র নেতা ও অসংখ্য কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কারাগারে বন্দি রুহুল কবির রিজভী ভীষণ অসুস্থ।’
তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বুকে ও পায়ে গুলিবিদ্ধ রুহুল কবির রিজভী ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় ফুসফুসে জটিলতা ও হার্টের মারাত্মক রোগে ভুগছেন। তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না। তাকে সবসময় লাঠির ওপর ভর করে চলতে হয়। এমন পরিস্থিতিতেও কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে দীর্ঘপথ পারি দিয়ে প্রিজন ভ্যানে তাকে পুরান ঢাকার আদালতে আনা-নেওয়া করা হচ্ছে। প্রিজন ভ্যানে বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। এমনকি কোনো কিছু ধরে দাঁড়িয়ে থাকারও ব্যবস্থা নেই। সেই প্রিজন ভ্যানে করেই অসুস্থ রুহুল কবির রিজভীকে প্রায় প্রতিদিন আদালতে আনা নেওয়া করা হয়।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘রিজভী আহমেদ বর্তমান সরকারের চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। সরকারের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার কন্ঠ বলেই রোষানলের শিকার হয়েছেন রিজভী। তার মতো একজন জাতীয় নেতা কারাগারে ভীষণ অসুস্থ হলেও তাকে সুচিকিৎসা দিতে কর্তৃপক্ষ চরম অবহেলা করছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা অবিলম্বে অসুস্থ রুহুল কবির রিজভীর মুক্তি চাই।’
রুহুল কবির রিজভী ছাড়াও বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদলের সহ-সভাপতি ইউসুফ বিন জলিল কালু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহবায়ক গোলাম মাওলা শাহীনসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি চান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্মূল ও পর্যদুস্ত করতে আওয়ামী সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতাদের কারাগারে পাঠিয়েছে। তারা সারাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। কারাগারগুলোতে এখন তিল ধারণের ঠাঁই নেই।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতাকুক্ষিগত করে রাখার জন্য এবং বিএনপিকে নেতৃত্বহীন করার লক্ষে আবার পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে। মিথ্যা, গায়েবি মামলা, গ্রেফতার, ঘরে ঘরে তল্লাশি এবং হয়রানী করে নির্যাতন নিপীড়নের মাত্রা বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ্যা মামলায় নেতাকর্মীদের কারাগারে নিয়ে যে ধরনের নির্যাতন করা হচ্ছে, তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়।’
তিনি বলেন, ‘মিথ্যা মামলাকে বর্তমান সরকার প্রজেক্ট হিসেবে নিয়েছে। কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা শত শত লোককে আসামি করে মামলা দিচ্ছে। ফলে বিএনপি নেতারা জামিন নিয়ে যখন বের হয়, তখন আবার জেলগেটে গ্রেফতার করা হয়। এখানে আছে বাণিজ্যের ব্যাপার।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের কারাগারে নেওয়ার পর প্রথমে কনডেম সেলে রাখা হয়েছিল কোয়ারেন্টিনের নামে, যা চরম অমানবিক। এক্ষেত্রে কারাবিধি মানা হয়নি। কারাগারের আচরণ ও নিপীড়ন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা জহির উদ্দিন স্বপন, কামরুজ্জামান রতন, এডভোকেট মেজবাহ, তাইফুল ইসলাম টিপু, সাঈদ সোহরাব, তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।
সারাবাংলা/ এজেড/এনইউ