প্রশাসনিক পদ ছাড়লেন চবি প্রক্টরসহ ১৬ শিক্ষক
১২ মার্চ ২০২৩ ১৪:৩৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রক্টর, সহকারী প্রক্টরসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ থেকে ১৬ জন শিক্ষক একযোগে পদত্যাগ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে তারা পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে ১৬ শিক্ষক একযোগে চবির রেজিস্ট্রারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
জানতে চাইলে চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৬ জনের পদত্যাগপত্র পেয়েছি। উনারা ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করে পদত্যাগ করেছেন।’
জানা গেছে, প্রশাসিনক মোট ১৮টি পদের মধ্য থেকে দু’জন ছাড়া বাকি সবাই পদত্যাগ করেছেন। এদের মধ্যে আছেন- প্রক্টর ড. রবিউল ইসলাম ভূঁইয়া ও ৬ জন সহকারী প্রক্টর এবং হল প্রভোস্ট, আবাসিক শিক্ষক ও বিভিন্ন প্রশাসনিক ইউনিটের পরিচালকসহ ৯ জন।
পদত্যাগকারীরা হলেন- প্রক্টর অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভুইয়া, সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম, এসএএম জিয়াউল ইসলাম, ড. রামেন্দু পারিয়াল, গোলাম কুদ্দুস লাবলু ও মোহাম্মদ শাহরিয়ার বুলবুল তন্ময়, ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল, এএফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক আনাবিল ইহসান, প্রীতিলতা হলের আবাসিক শিক্ষক ফারজানা আফরিন রূপা, শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষক ড. এইচএম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষক রমিজ আহমেদ সুলতান, শামসুন নাহার হলের আবাসিক শিক্ষক শাকিলা তাসমিন, খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মো. শাহ আলম, নাসরিন আক্তার ও উম্মে হাবিবা, আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষক ঝুলন ধর।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভুইয়া শহীদ আব্দুর রব হলের প্রভোস্ট এবং সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বুলবুল তন্ময় শাহজালাল হলের আবাসিক শিক্ষক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন। তারা অতিরিক্ত দায়িত্বও ছেড়ে দিয়েছেন।
পদত্যাগী শিক্ষকদের কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
তবে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য ড. শিরিন আক্তারের সঙ্গে এই শিক্ষকদের বিরোধ চলছিল, যাদের সবাই এই উপাচার্যের সময়কালেই প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পেয়েছেন। উপাচার্যের সিদ্ধান্তে আত্মীয়স্বজনের হস্তক্ষেপ, সিন্ডিকেট সদস্যের প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষকদের দ্বিমত ছিল।
পদত্যাগী শিক্ষকরা মনে করেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে যেসব সমালোচনা ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে, এতে উপাচার্যের ঘনিষ্ঠজনদের দায় অাছে। কিন্তু প্রশাসনিক পদে থাকায় অযথা তাদের দুর্নামের দায় নিতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় ১৬ শিক্ষক প্রশাসনিক পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এ বিষয়ে চবি উপাচার্য শিরিণ আক্তারের বক্তব্য জানতে পারেনি সারাবাংলা।
এদিকে পদত্যাগের ঘন্টাখানেকের মধ্যেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রক্টর ও দু’জন সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদারকে প্রক্টর ও একই বিভাগের প্রভাষক সৌরভ সাহা জয় ও ওশানোগ্রাফি বিভাগের প্রভাষক রুকন উদ্দীনকে সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ।
সারাবাংলা/আরডি/ইআ