চবি প্রশাসন থেকে আরও ৩ শিক্ষকের পদত্যাগ
১৩ মার্চ ২০২৩ ১৫:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসনের চারটি পদ থেকে আরও তিনজন শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। এ নিয়ে দুইদিনে ১৯ জন শিক্ষক প্রশাসন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে তিন শিক্ষক চবি রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগীরা হলেন- সহকারী প্রক্টর পদ থেকে লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াকুব, অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের প্রভোস্ট পদ থেকে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমন বড়ুয়া এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট পদ প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।
চবি’র পরিবহন বিভাগের প্রশাসকের দায়িত্ব থেকেও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন।
এ বিষয়ে চবি’র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে পদত্যাগী তিন শিক্ষক সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, তারা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ব্যক্তিগত কারণে তারা পদত্যাগ করেছেন বলে আবেদনে উল্লেখ করেছেন।
এর আগে, রোববার ১৮টি প্রশাসনিক পদ থেকে প্রক্টরসহ ১৬ শিক্ষক একযোগে পদত্যাগ করেন।
পদত্যাগীরা হলেন- প্রক্টর অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভুইয়া, সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম, এসএএম জিয়াউল ইসলাম, ড. রামেন্দু পারিয়াল, গোলাম কুদ্দুস লাবলু ও মোহাম্মদ শাহরিয়ার বুলবুল তন্ময়, ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল, এএফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক আনাবিল ইহসান, প্রীতিলতা হলের আবাসিক শিক্ষক ফারজানা আফরিন রূপা, শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষক ড. এইচএম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষক রমিজ আহমেদ সুলতান, শামসুন নাহার হলের আবাসিক শিক্ষক শাকিলা তাসমিন, খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মো. শাহ আলম, নাসরিন আক্তার ও উম্মে হাবিবা, আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষক ঝুলন ধর।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভুইয়া শহীদ আব্দুর রব হলের প্রভোস্ট এবং সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বুলবুল তন্ময় শাহজালাল হলের আবাসিক শিক্ষক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন। তারা অতিরিক্ত দায়িত্বও ছেড়ে দিয়েছেন।
পদত্যাগী শিক্ষকরা জানিয়েছেন, চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতারের সঙ্গে প্রায় একবছর ধরে মতবিরোধের পর শিক্ষকরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
শিক্ষকদের দাবিদাওয়া পূরণে অনীহা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও অপমান করা, জ্যেষ্ঠ্যতা লঙ্ঘন, প্রশাসনিক পদে থাকা শিক্ষকদের মতামতকে প্রাধান্য না দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনায় পরিবারের সদস্যের অযাচিত হস্তক্ষেপ, একজন সিন্ডিকেট সদস্য ও দফতরের এক কর্মকর্তার প্রভাব বিস্তার, নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতি, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে বিভক্তি এনে নিজস্ব বলয় তৈরির চেষ্টা এবং বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের প্রাধান্য দেওয়া – এসব বিষয়ে মতবিরোধের জেরে শিক্ষকদের সঙ্গে উপাচার্যের দূরত্ব তৈরি হয়।
তবে উপাচার্য শিরীন আখতার পদত্যাগীদের ‘ঘরশত্রু বিভীষণ’ উল্লেখ করে বলেন, তাকে (উপাচার্য) ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করতে না পেরে শিক্ষকরা সরে দাঁড়িয়েছেন, যাদের মধ্যে দু’জনকে তিনি নিজেই পদত্যাগ করতে বলেছেন।
রোববার ১৬ শিক্ষক পদত্যাগের ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই উপাচার্য নতুন প্রক্টর ও দু’জন সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেন। ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদারকে প্রক্টর ও একই বিভাগের প্রভাষক সৌরভ সাহা জয় ও ওশানোগ্রাফি বিভাগের প্রভাষক রুকন উদ্দীনকে সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/সিসি/ইআ