মেট্রোরেল নয়, বাসের জন্য আলাদা লেন নির্মাণের প্রস্তাব
১৯ মার্চ ২০২৩ ২২:৩৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে মেট্রোরেল দিয়ে যানজট নিরসন হবে না বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর বদলে গণপরিবহন বিশেষ করে বাসের জন্য ডেডিকেটেড (আলাদা) বিশেষায়িত লেন নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।
রোববার (১৯ মার্চ) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ‘পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম’র এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়। ‘বন্দরনগরী চট্টগ্রামের যোগাযোগ ভৌত অবকাঠামো কোন পথে’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলেন লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ফোরামের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া। এতে মেট্রোরেল, বিআরটি, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, মহাপরিকল্পনা নিয়ে তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
সুভাষ বড়ুয়া বলেন, ‘নগর ও বন্দরের সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, যানবাহন চাহিদা ব্যবস্থাপনা ছাড়া শুধুমাত্র সবচেয়ে ব্যয়বহুল আধুনিক গণপরিবহন মেট্রোরেল চালু করে চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসন সম্ভব নয়। মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে ২-৩ বছর লাগবে। সবকিছু মিলে ১০ বছর লাগবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে লাগবে আরও ৬-৭ বছর। সবকিছু মিলিয়ে সময় লাগবে ১০ বছর। এই ১০ বছর কি চট্টগ্রামবাসী অসহনীয় যানজটে দিনাতিপাত করবে?’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের ১৯৯৫ সালের মহাপরিকল্পনায়, ২০০৮ সালে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান এবং ২০১৮ সালের স্ট্র্যাটেজিক মাস্টারপ্ল্যানের সুপারিশে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, যানবাহন ব্যবস্থাপনা (টিডিএম), বাসের জন্য আলাদা লেন করা, ফুটপাত ব্যবস্থাপনা, বিদ্যমান সড়কের শতভাগ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার বিষয় উল্লেখ আছে। বাস র্যাপিড ট্রানজিট— বিআরটি যদি সময়সাপেক্ষও হয়, বিদ্যমান সড়কেই আগামীকাল থেকে বাসের জন্য বিশেষায়িত লেন চালু করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেট্রোরেলের মতো ব্যয়বহুল গণপরিবহন অবকাঠামো নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই এমন এক সময় করা হয়েছে, যখন বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব মহামন্দার দিকে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও দিন দিন কমে যাচ্ছে। এই মন্দার সময় চট্টগ্রাম নগরে মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই সত্যিই অত্যাবশ্যকীয় কি না, এটা বিবেচনায় রাখতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বন্দরনগরী চট্টগ্রামে রাজধানী ঢাকার মতো জনসংখ্যা নেই। রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন যাত্রী ট্রিপ হয় ২১ মিলিয়ন। আর চট্টগ্রাম নগরে প্রতিদিন যাত্রী ট্রিপ হয় ৬ দশমিক ৭ মিলিয়ন যা ২০৩০ সালে হতে পারে ১০ দশমিক ৪ মিলিয়ন। চট্টগ্রামে বাস-মিনিবাস ৮ শতাংশ, প্রাইভেটকার ১০ শতাংশ, বেবি ট্যাক্সি ৩৯ শতাংশ এবং রিকশা ৪৩ শতাংশ।
‘এজন্য চট্টগ্রামের মেট্রোরেলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ঢাকায় বিআরটির পরিকল্পনায় ভুল ছিল। এজন্য অনেক জটিলতা হয়েছে। চট্টগ্রামের বিআরটি জন্য করিডোর ঠিক করা আছে।’
সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান, উপদেষ্টা অধ্যাপক শফিক হায়দার চৌধুরী, সহ-সভাপতি প্রকৌশলী এবিএমএ বাসেত, স্থপতি আহমেদন জিন্নুর, বিধান বড়ুয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাসলিমা মুনা, সদস্য অধ্যাপক ড. নাজিম উদ্দিন এবং তানভীর পিয়াল উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম